লালগড়ে ফের বাঘের আনাগোনা,পায়ের ছাপ ঘিরে আতঙ্ক! কোন পথে আগমন দক্ষিণরায়ের
প্রতিদিন | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: পুজোর আগে লালগড়ে ফের বাঘের আতঙ্ক! জনাশুলি, লক্ষ্মণপুরের জঙ্গলে এদিন বেশ কয়েকটি পায়ের ছাপ ঘিরে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। প্রাথমিকভাবে যদিও মনে করা হচ্ছে ওই পায়ের ছাপগুলি হয়তো বড় কোনও বনবিড়াল কিংবা নেকড়ে বাঘের পায়ের ছাপ হতে পারে। তবে উদ্ধার হওয়া পায়ের ছাপগুলি অন্য কথা বলছে।
জানা যাচ্ছে, ছাপগুলি লম্বায় ১১ এবং চওড়ায় ১০ সেন্টিমিটার, যা রয়াল বেঙ্গল টাইগারের পায়ের থাবার মাপ। সত্যিই ফের লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি? কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ বনদপ্তর। নিশ্চিত হতে বিভিন্ন জায়গায় ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বনদপ্তর। বাড়ানো হচ্ছে নজরদারিও।
লালগড়ে বাঘের আতঙ্ক নতুন নয়! গত বছরের শেষ নাগাদ ওড়িশার সিমলিপাল থেকে জিনাত নামে এক বাঘিনীকে ধরা হয়। দুদিন ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে ছিল। যদিও পরে বাঁকুড়ায় বনদপ্তরের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে ওই বাঘটি। এরপরেও চলতি বছরের গোড়ায় ওই বাঘিনীর পিছু নিয়ে আরও এক পুরুষ বাঘকেও বেলপাহাড়ির জঙ্গলে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। পরে সে নির্দিষ্ট জায়গায় ফিরে যায়!
তবে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে লালগড়ের জঙ্গলমহল এলাকার মেলখেড়িয়ার জঙ্গলে প্রথমবার বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল। পরে বনদপ্তরের ক্যামেরাতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের উপস্থিতিও পাওয়া যায়। কিন্তু সেটিকে ধরা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠেছিল বন বিভাগের কাছে।
ওই বাঘটিকে পরে মেদিনীপুরের চাঁদড়ার জঙ্গলে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে বনদপ্তর। কিন্তু সেটির মৃত্যু কীভাবে হয় তা আজও রহস্য! তবে জঙ্গলে শিকারিদের হাতেই বাঘটির মৃত্যু হয়েছিল বলে বলে দাবি। ফলে সেই জেলার মানুষের কাছে বাঘের আতঙ্ক টাটকা। এর মধ্যেই এদিন সকালে জনাশুলি, লক্ষ্মণপুরের জঙ্গলে পাতা কুড়োতে গেলে স্থানীয় মানুষজন ওই বাঘের ছাপ দেখতে পান। খবর যায় বনদপ্তরের কাছে। কিন্তু বারবার কীভাবে দক্ষিণরায় বেলপাহাড়ি কিংবা লালগড়ের জঙ্গলে ঢুকছে?
আধিকারিক বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে বাঘগুলি ওড়িশার সিমলাপাল রিসার্ভ ফরেস্ট থেকে বেরিয়ে ঝাড়খন্ড হয়ে পুরুলিয়া, বেলপাহাড়ি, বাঁকুড়া জঙ্গলমহলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রেও একই পথে ফের একবার দক্ষিণরায়ের আগমণ জনাশুলি, লক্ষ্মণপুরের জঙ্গলে?