রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিহারের ভোট পেরলেই বাংলায় পরীক্ষায় বসবে বিজেপি। পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খামতি রাখতে চায় না বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। গত এক দশকে তিন সভাপতি এসেছেন গিয়েছেন, কিন্তু সাফল্য অধরাই থেকে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এবার সেই ধারা ভেঙে জয়ের রাস্তায় ফিরতে মরিয়া বিজেপি বুধবার থেকেই শুরু করে দিয়েছে বৈঠক। এবার আরএসএস এবং বিজেপি-র সমন্বয় বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনে জয়ের পথ খুঁজতে চাইছে বিজেপি। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বঙ্গ বিজেপির ম্যারাথন বৈঠক চলছে বিধাননগরের এক পাঁচতারা হোটেলে। বুধবার রাত থেকেই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সংগঠন, বি এল সন্তোষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কখনও বঙ্গের গেরুয়া শিবিরের নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে, আবার কখনও একসঙ্গে সকল নেতার সঙ্গে বৈঠক করছেন সন্তোষ। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন, বি এল সন্তোষ, শমীক ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, অমিত মালব্য, অমিতাভ চক্রবর্তী, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য বেশ কয়েকজন বিধায়ক, সাংসদ এবং নেতারা।
জানা গিয়েছে, শুধু বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব নয়, এই বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং তার কয়েকটি শাখা সংগঠন এর নেতৃত্বও। উপস্থিত রয়েছেন, জলধর মাহাতো, শচীন্দ্র নাথ সিনহা, রমাপদ পাল, জিষ্ণু বসু এবং প্রদীপ জোশি-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে মূলত রাজ্য কমিটি নিয়ে। সেখানে বি এল সন্তোষের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হয়ে গেলেও এখনও তৈরি হয়নি রাজ্য কমিটি। জানা গিয়েছে রাজ্য কমিটি তৈরি নিয়ে দোটানায় রয়েছে বিজেপি। দলের অন্তর্কলহ মিটিয়ে রাজ্য কমিটিকে কার্যকর করা এই মুহূর্তে দলের মূল লক্ষ্য বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, বিজয় দশমীর দিন একশো বছর পূর্ণ হচ্ছে সংঘের। একশো বছর উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। জানা গিয়েছে, এবিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা হচ্ছে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে। চলতি বছরে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় তিনদিনব্যাপী সমন্বয় বৈঠক হয় আরএসএস এবং বিজেপির মধ্যে। এরপর ফের বৃহস্পতিবারের বৈঠক আগামী নির্বাচনের রূপরেখা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এত বছরের নির্বাচনি ক্ষরা কাটাতে আরএসএস এবং বিজেপির সমন্বয় করে প্রভাব ফেলাই মূল উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং আরএসএস-এর সঙ্গে এসআইআর ও সিএএ নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, এসআইআর কার্যকর হওয়ার আগে এবং পরে রাজ্যের প্রেক্ষাপট এবং সেখানে বিজেপি নেতাদের কী ভূমিকা হবে সেই প্রসঙ্গে বিস্তারে আলোচনা হচ্ছে বি এল সন্তোষের সঙ্গে।