মামার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ দশম শ্রেণির ছাত্রী, চন্দননগর থানায় মিসিং ডায়রি...
আজকাল | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি : মাস সাতেকের মধ্যে মা বাবার মৃত্যুর পর চন্দননগরের কাঁটাপুকুরে মামার বাড়িতেই গত কয়েক মাস ধরে থাকছিল শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। ইমামবাড়ার কাছে একটি বেসরকারী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ক্লাস টেনের ছাত্রী সে। এবছর তার বোর্ড পরীক্ষা দেওয়ার কথা।
গত শুক্রবার সকালে স্কুলে অনুষ্ঠান আছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। অন্যদিন স্কুলে পুলকারে যাতায়াত করলেও ওইদিন দিদার থেকে একশো টাকা নিয়ে বের হয় টোটো করে যাবে বলে। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় ছাত্রীর মামা অমিত পাল ও তার বন্ধুরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।সমাজ মাধ্যমেও ছবি দিয়ে খুঁজে দেওয়ার আবেদন করেন। ছাত্রীর কাছে মোবাইল থাকলেও তা বন্ধ রয়েছে। কোথাও খোঁজ না পেয়ে চন্দননগর থানায় অভিযোগ করেন অমিত পাল।
শর্মিষ্ঠার দাদু শংকর ও দিদা পার্বতী পাল জানান,গত বছর ডিসেম্বর মাসে মেয়ে শাশ্বতী লিউকোমিয়া মারা যায়। এবছর জুলাই মাসে জামাই অরিন্দম মুখার্জির মৃত্যু হয়। এরপর নাতনি একা হয়ে যায়। তারপর থেকে চুঁচুড়া কোদালিয়ায় তাদের বাড়ি ছেড়ে কাঁটাপুকুরে আমাদের বাড়িতেই থাকে। এখান থেকেই স্কুলে যেত। মামা অমিত জানান, ইংরেজিতে লেখা একটা নোট পাওয়া গেছে। সে তাতে লিখেছে,কারও সঙ্গে নিজের ইচ্ছায় সে চলে যাচ্ছে । কোথায় গেল, কি অবস্থায় আছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। খুবই দুশ্চিন্তায় আছি,বলেন বৃদ্ধ দম্পতি। পুলিশ সূত্রে খবর,মোবাইল লোকেশান ট্র্যাক করা হচ্ছে। সব থানায় জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন দেখার জন্য মায়ের কাছে বকা খেয়েছিল একটি মেয়ে। তারপর থেকেই খোঁজ মিলছিল না স্কুল পড়ুয়ার। মেয়ের খোঁজে হন্যে ছিল পরিবার। অভিযোগ দায়ের হয় চন্দননগর থানায়। সামনেই বার্ষিক পরীক্ষা তার আগে ঘন্টা পর ঘন্টা মোবাইল নিয়ে বসে থাকায় মা বকাবকি করেছিলেন।বিকালে মায়ের চোখ একটু লেগে আসতেই দরজায় বাইরে থেকে হ্যাজবোল্ড টেনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মেয়ে।
চন্দননগর ছবিঘরের বাসিন্দা কনক ও ইদ্রানী মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে কৌশাণী মুখোপাধ্যায়। চন্দননগর সেন্ট জোসেফ কনভেন্টের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনার দিন স্কুলে না যাওয়ায় বাড়িতেই ছিল সে। কিন্তু প্রায় সারাক্ষণ নজর ছিল মোবাইল ফোনের দিকে। পরিবার সূত্রের খবর, মেয়েকে ফোন ঘাঁটতে দেখে বকাবকি করেছিলেন মা। মোবাইল কেড়েও নেন।
পরিবার সূত্রের খবর, বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় পড়ুয়া, যাওয়ার আগে তার মা যে ঘরে ছিলেন, ওই ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে যায় বলেও জানা গিয়েছে। চন্দননগর শহরে সর্বত্র খোঁজ খবর করেও রাত পর্যন্ত পড়ুয়ার সন্ধান মেলেনি। পুলিশ একটি অপহরণ মামলা রুজু করেছে বলেও জানা গিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ শহরের বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি খতিয়ে দেখছে। তার দাদাকে সঙ্গে নিয়ে শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায়। ট্রেনে করে অন্যত্র চলে যেতে পারে, সেই অনুমানে জিআরপিকে নিখোঁজের খবর জানানো হয়েছে। কথা বলা হচ্ছে তার বন্ধুদের সঙ্গেও।
ছাত্রীর মা ইদ্রানী জানিয়েছেন, ‘সামনে ফাইনাল পরীক্ষা।বা ড়িতে শুধু মোবাইল নিয়ে বসে থাকে মেয়ে। পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছিল। তা নিয়ে একটু বকেছিলাম। মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছিলাম। তার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। কোথায় গেল বুঝে উঠতে পারছি না। ওর বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করেছি, কেউ বলতে পারছে না।‘ ছাত্রীর বাবা বলছেন, ‘এক সপ্তাহ পর পরীক্ষা। স্কুলে না গিয়ে মোবাইল দেখছিল তাই আমিও বলেছিলাম বই সব ফেলে দেব। তারপর দুপুরে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়াও হল। আমি বিকেলে বেরিয়েছিলাম কেনাকাটা করতে। দোতলায় ছেলে ছিল। সে নীচে নেমে দেখে দরজা খোলা।‘