সাফল্যের দৌড়ে যুবসমাজ আক্রান্ত একাধিক রোগে, হৃদরোগে যাচ্ছে প্রাণ! সচেতনতায় পরামর্শ চিকিৎসক পূর্ণেন্দু রায়ের...
আজকাল | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্তমান যুগের কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা সবাই দৌড়চ্ছি। কিন্তু কোথায় যাচ্ছি সেটা ভেবে দেখার সময় নেই কারও। সাফল্য পেতে গিয়ে নিজেদের শরীর ও স্বাস্থ্য নিয়ে খেয়াল রাখতে ভুলে গিয়েছি আমরা! অফিসের চাপ, ফোনে সোশ্যাল মিডিয়ার আপডেট, তার সঙ্গে জাঙ্ক ফুড, সব মিলিয়ে যেন শরীর-মনকে যত্ন নেওয়ার কথা আমরা ভুলেই গিয়েছি। অথচ হিসেব বলছে, প্রতিটি মানুষ এক সপ্তাহে গড়ে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ফাঁকা সময় পান, কিন্তু সেই সময়টুকু নিজের সুস্থতা বা মানসিক ভারসাম্যের জন্য ব্যবহার করেন না অনেকেই।
এমন বাস্তবতার মাঝেই সামনে আসে বড় প্রশ্ন, সাফল্য নিয়ে মানুষ আসলেই কি খুশি? না কি শুধু বলা হয় ‘খুশি আছি’?
এই প্রেক্ষাপটেই জেনেসিস হসপিটালের এমডি তথা চেয়ারম্যান ডঃ পূর্ণেন্দু রায় এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। রোটারি সদনে অনুষ্ঠিত একটি সেশনে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে ব্যস্ততার মাঝেও নিজেদের জন্য সময় বার করা যায়। কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখা যায় এবং জীবনযাত্রাজনিত রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।
চিকিৎসক পূর্ণেন্দু রায় তাঁর প্রেজেন্টেশনে সহজ ভাষায় বুঝিয়ে বলেন-
* কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সঠিক সীমারেখা টানা কেন জরুরি।
* সপ্তাহে সামান্য কিছু সময়কে নিজের জন্য রাখলে কীভাবে মানসিক চাপ কমানো যায়।
* অল্প অল্প পরিবর্তন করে কীভাবে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করা সম্ভব।
তিনি কিছু বিষয় জোর দিয়ে আরও বলেন, “শুধু কাজ করলেই চলবে না, নিজেদেরও ভালভাবে রাখতে শিখতে হবে। কারণ সুস্থ মন এবং শরীর ছাড়া জীবনের আনন্দ আসবে না।”
সেশনে উপস্থিত অনেকে জানান, ড. রায়ের বক্তব্য তাঁদের চোখ খুলে দিয়েছে। অনেকেই প্রতিজ্ঞা করেন প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় নিজেদের জন্য রাখবেন।
আজকাল ডট ইনের মুখোমুখি হয়ে চিকিৎসক বলেন, “সমাজের প্রত্যেকটি মানুষ সাফল্যের জন্য টাকার পিছনে দৌড়াচ্ছেন, কিন্তু মানুষ নিজের শরীরের কথা ভাবতে ভুলে গিয়েছে। আর যার জন্য অল্প বয়সে বিশেষত পুরুষদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের পাশাপাশি একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। যার ফলে কখনও কখনও নানাবিধ সমস্যার দেখা দিচ্ছে যুবসমাজের মধ্যে। ৩৭-৩৮ বছরের ব্যক্তিদের মধ্যেও ব্লাড প্রেসার, কার্ডিয়াক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “একই সাথে যুবসমাজ সাফল্যের পিছনে ছুটে চলেছে। অতি অল্প সময়ে সাফল্য পাওয়ার আশায় রাতে না ঘুমানোর কারণে তৈরি হচ্ছে ইরিটেশন, অ্যাংজাইটি, মানসিক জটিলতা সহ একাধিক সমস্যা। যার সচেতনতা নিয়েই আমাদের আজকের এই অনুষ্ঠান।”
আধুনিক জীবনে যেখানে সুখকে আমরা প্রায়ই কেবল ভোগের সঙ্গে মেলাই, সেখানে ড. পূর্ণেন্দু রায়ের বার্তা স্পষ্ট—নিজের যত্ন নেওয়াই আসল সুখের প্রথম ধাপ।