• বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে কমিশন, অভিযোগ রাহুলের
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ভোট চোরদের বাঁচাচ্ছেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। রহস্যজনকভাবে অনলাইনে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাতিল হলেও তদন্তে কোনও সাড়া দিচ্ছেন না। কাদের আড়াল করছেন তিনি? বৃহস্পতিবার সরাসরি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নাম দিয়ে তোপ দাগলেন রাহুল গান্ধী। এমনকী দিলেন আলটিমেটাম। এক বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কর্ণাটক সিআইডির তদন্তের যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিন। নাহলে দেশের যুব সমাজ পথে নামবে। ভারতের গণতন্ত্রকে মুছে দিতে চাইছেন জ্ঞানেশ কুমার। অত্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক বাতিল হচ্ছে বিজেপি বিরোধীদের ভোট। যদিও রাহুল গান্ধীর এই অভিযোগ শোনামাত্রই নস্যাৎ করে দিয়েছে কমিশন। কোটলা রোডে কংগ্রেসের নতুন সদর দপ্তরে লোকসভার বিরোধী দলনেতা ভোট চুরির অভিযোগে কী ‘বোমা’ ফাটান, তা জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। অশোক রোডে কমিশনের সদর দপ্তরে চলছিল টিভি। সেখানেই রাহুলের অভিযোগ ‘লাইভ’ দেখেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। রাহুলের সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কমিশন জানান, অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অনলাইনে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া যায় না। নিয়ম হল, যার নাম বাদ দেওয়া হবে, তাকে নোটিশ পাঠিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হবে। যদিও কমিশন এরপর কিছুটা ঢোঁক গিলে একপ্রকার মেনেই নিয়েছে যে, ২০২৩ সালে কর্ণাটকে আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে কিছু নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কোনও দুষ্কৃতী। তবে তা সফল হয়নি। কমিশন এফআইআর করে বিষয়টির তদন্ত করেছে। তাছাড়া যে আলন্দ কেন্দ্রে গোলমালের অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেখানে ২০২৩ সালে কংগ্রেসের বি আর পাতিল জিতেছেন।  যদিও কংগ্রেসের বক্তব্য, হারজিত বিষয় নয়। ইস্যু: ভোট চুরি। এবং সেটি কমিশন জেনেও কিছু করছে না। কেন করছে না? প্রশ্ন সেখানেই। নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি খাড়া করতে এদিন চমকপ্রদভাবে এআইসিসির ওই প্রেক্ষাগৃহে হাজির করার কর্ণাটকের নির্দিষ্ট কয়েকজনকে। ভোটারদের নাম বাদ দিতে যে ব্যক্তি কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলেন। এবং যে বিএলওর কাকার নাম বাদ গিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির সুর্যকান্ত বলছেন, আমি কারও নাম কাটার কোনও আবেদনই করিনি। ভিডিও বার্তায় আর এক আবেদনকারী গোদাবা‌ইও বলছেন, আমি কারও নাম বাদ দেওয়ার বিষয় জানিই না। অথচ রাহুল জানিয়েছেন, এই দুই ব্যক্তির নামেই অনলাই঩নে একাধিক ব্যক্তির ভোটার কার্ড বাদ দেওয়ার আবেদন জমা পড়েছে। একইভাবে নাগরাজ নামে এক ব্যক্তি মাত্র ৩৬ সেকেন্ডে বেশ কিছু ভোটারের নাম বাদ দিয়েছেন বলেই অভিযোগ। তাই রাহুলের প্রশ্ন, বাস্তবে এঁরা যদি কারও নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেনইনি, তাহলে কে করল? রাহুলের অভিযোগ, বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করে কংগ্রেসের গড় আলন্দে ৬ হাজার ১৮ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির গড় রাজুরাতে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম যোগ করা হয়েছে। কর্ণাটকের বাইরের লোক তা করেছে। কারণ, আবেদনকারীদের মোবাইল নম্বর কর্ণাটকের কারও নয়। রাহুলের সওয়াল, আলন্দের এই কারচুপির তদন্ত করছে সিআইডি। তদন্তের স্বার্থে ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য চেয়ে ১৮ বার চিঠি দিয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। অথচ জ্ঞানেশ কুমার এখনও জবাব দেননি। কেন দেননি? তবে কি ভোট চোরদেরই আড়াল করতে চাইছেন তিনি? 
  • Link to this news (বর্তমান)