• পর্যটকদের জন্য খুলছে নেওড়াভ্যালির জঙ্গল, নতুন বছরে চালু ট্রেকিং রুট
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: এবার অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের জন্য খুলে যাচ্ছে নেওড়াভ্যালি জঙ্গলের দরজা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের গোড়াতেই নেওড়ার জঙ্গলে চালু হতে চলেছে তিনটি ট্রেকিং রুট। তার আগে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ সেরে ফেলতে চাইছে বনদপ্তর। জঙ্গল সংরক্ষণের পাশাপাশি বনবাসীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাজে উদ্যোগী হয়েছে ফ্রান্সের উন্নয়ন সংস্থা। ওই প্রকল্পে কয়েক হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত নেওড়ার জঙ্গলে ট্রেকিং রুট তৈরির পাশাপাশি পর্যটকদের সেখানে রাতে থাকার জন্য বহু পুরনো কটেজগুলি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গোরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেন বলেন, ‘পর্যটকদের অনেকেই ঘুরতে এসে অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। তাঁদের জন্য নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে আমরা ট্রেকিং রুট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যটকরা যাতে কয়েক হাজার ফুট উঁচুতে নেওড়ার জঙ্গলে রাত কাটাতে পারেন, সেজন্য চৌদাফেরি, আলুবাড়িতে যেসব পুরনো কটেজ রয়েছে, সেগুলিও সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই যাতে ট্রেকিং রুট চালু করা যায়, তার চেষ্টা চলছে।’

    নেওড়ার জঙ্গল এতটাই ঘন যে, ঠিকমতো দিনের আলো ঢোকে না। জঙ্গলের শ্যাওলা ধরা বিশাল প্রাচীন গাছ, নাম না জানা পাখির ডাক, বাহারি প্রজাপতির মেলা, গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ধনেশ, ময়ূরের নাচ, রঙিন ছত্রাক আপন করে নেয় কয়েক মুহূর্তে। প্রায় ১৬০ কিমি জুড়ে ছড়িয়ে থাকা নেওড়ার জঙ্গলের এখনও সেভাবে মানুষের পা পড়েনি বললেই চলে। চৌদাফেরি পর্যন্ত যেহেতু গাড়ি যায়, ফলে ওই পর্যন্ত কিছু পর্যটক গিয়ে দিনের দিন ফিরে আসেন। উত্তরের এই জঙ্গলে রয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ট্র্যাপ ক্যামেরায় বারবার সেই ছবি ধরা পড়েছে। ফলে সবটা মাথায় রেখেই ওই জঙ্গলে নিরাপদ জায়গা বেছে নিয়ে ট্রেকিং রুট চালুর চিন্তাভাবনা চলছে বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর।

    হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন,  নেওড়ার জঙ্গলে ট্রেকিং রুট চালু হলে খুবই ভালো। তবে গাইড বাধ্যতামূলক হওয়া দরকার। এদিকে, শীতে পরিযায়ী পাখি ফেরাতে গোরুমারা জঙ্গলের ভিতর চুকচুকি লেক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা পর্যটক টানতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বনকর্তারা। তবে, রামসাইয়ে প্রজাপতি পার্কটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরা। তাঁদের বক্তব্য, রামসাই বাটারফ্লাই গার্ডেন অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। এখানে নিজে হাতে বাগানে প্রজাপতি ছাড়ার সুযোগ ছিল। এতে ভীষণ আনন্দ পেত ছোটরা। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জঙ্গলের ভিতরে কালীপুরে বোটিংয়ের ব্যবস্থা ছিল একসময়। সেটিও দীর্ঘদিন বন্ধ। মেদলায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকে বনদপ্তরের রাইনো ক্যাম্পে রাত কাটাতে পছন্দ করতেন। করোনার পর থেকে বন্ধ সেই বনবাংলো। ফলে রামসাই-মেদলায় বেড়াতে আসার ব্যাপারে পর্যটকরা আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে দাবি গাইড, কার সাফারির চালকদের। ডিএফও বলেন, চুকচুকি লেক, চুকচুকি ওয়াচ টাওয়ার, রাইনো জঙ্গল ক্যাম্প, প্রজাপতি পার্ক সবটাই প্রকল্পের মধ্যে ধরা রয়েছে। ধীরে ধীরে কাজ হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)