• বচসার পর সহকর্মীর পেটে কাঁচি যুবকের রায়গঞ্জ মেডিকেলে রক্তারক্তি, তদন্ত শুরু পুলিশের
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: বহিরাগত নয়, রায়গঞ্জ মেডিকেলের লন্ড্রি কর্মীদের মধ্যে বচসা থেকে হামলা এবং রক্তারক্তি কাণ্ড। বচসা চলাকালীন আচমকা সহকর্মীর পেটে ধারালো কাঁচি ঢুকিয়ে দেয় এক কর্মী। বৃহস্পতিবার সকালে এমন ঘটনায় মেডিকেল কলেজের অন্দরে হইচই শুরু হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ওই কর্মী। 

    রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, আহত কর্মীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হবে।

    হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে মর্গের কাছে মেডিকেলের অস্থায়ী লন্ড্রিকর্মী উত্তম দাস এবং সুপারভাইজার সাগর রজকের মধ্যে বেতন নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছিল। তার মাঝে উত্তম উত্তেজিত হয়ে সুপারভাইজারকে গালিগালাজ শুরু করে। অভিযোগ, ওই সময় আরেক লন্ড্রি কর্মী কার্তিক রজক ঘটনাস্থলে হাজির হন। চেঁচামেচি থামাতে বলায় আরও উত্তেজিত হয়ে যায় উত্তম। তখনই দু’এক কথা হতে না হতেই কার্তিকের পেটে ধারালো কাঁচি ঢুকিয়ে দেয় সে। লুটিয়ে পড়েন কার্তিক। মুহূর্তের মধ্যে রক্তে ভেসে যায় ঘটনাস্থল। চোখের সামনে এই ঘটনায় হাঁ হয়ে যান সুপারভাইজার সাগর। সেই মুহূর্তে মর্গের সামনে থেকে আক্রমণকারী উত্তম পালিয়ে আশ্রয় নেয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। অন্য কর্মীরা উত্তেজিত হচ্ছেন দেখে হাসপাতালের ক্যাম্পে থাকা পুলিশকর্মী, আধিকারিকরা জরুরি বিভাগে ছুটে যান। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আগে উত্তমকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় রায়গঞ্জ থানায়। কার্তিকের বাড়ি রায়গঞ্জ শহরের উকিলপাড়ায়।

    ঘটনা প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনও পক্ষ অভিযোগ করে থাকলেও পুলিশই বিষয়টি দেখবে। যে ঠিকাদার সংস্থা ওই কর্মীদের এনেছে, তারাই ওই কর্মীদের হাসপাতালে কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে। 

    আক্রান্ত কার্তিক বলেন, ঠিকাদার সংস্থার হয়ে অন্তত সাত বছর হাসপাতালে লন্ড্রির কাজ করছি।  এদিন সকালে কাজে যোগ দিতে এসে দেখি উত্তম গালিগালাজ করছে আমাদের সুপারভাইজারকে। উত্তমকে থামতে বললে তার হাতে থাকা কাঁচি আমার পেটে ঢুকিয়ে দেয়।

    উত্তমের দুর্ব্যবহার নিয়ে বিরক্ত লন্ড্রি সুপারভাইজার সাগরও। বলেন, উত্তমের বাড়ি বহরমপুরে। প্রায় চার মাস আগে এখানে কাজে যোগ দেয়। আগেও উত্তমের বিরুদ্ধে একাধিকবার হাসপাতালের কর্মী, নার্সদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। এদিন সকালে ও আমার সঙ্গেও একই আচরণ করে। কার্তিক প্রতিবাদ করতে গেলে হামলা চালায় সে। উত্তমকে নিরস্ত্র করতে গেলে আমিও ধারালো কাঁচির আঘাতে আহত হয়েছি। 

     অভিযুক্তকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)