• লাইনে দাঁড়িয়েও ট্রলি মেলেনি, বস্তায় শুইয়ে বৃদ্ধাকে নিয়ে আউটডোরে পরিবার
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: বস্তায় রোগীকে শুইয়ে চ্যাংদোলা করে আউটডোরে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ির লোকেরা। বৃহস্পতিবার অমানবিক এই দৃশ্য দেখা গেল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সকাল সকাল আউটডোরের টিকিট কেটে ট্রলির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েও তা মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে অর্থোপেডিক আউটডোরে এভাবেই এক রোগীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসেন পরিজনরা। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও রোগী পরিষেবায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার দিকটি প্রকট হয়ে উঠেছে। 

    ফুলবাড়ির বাসিন্দা নির্মলা সিংহ দীর্ঘদিন ধরে কোমরের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন। বসতে পারেন না, হাঁটা তো দূরের কথা। শুয়েই থাকেন। তাঁর পুত্রবধূ বিন্দেশ্বরী রায় বলেন, আমার স্বামী ট্রলির জন্য সকাল ৯টা থেকে ২৫ নম্বর কাউন্টারে লাইন দিয়েছিলেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ট্রলি পাওয়া যায়নি। এদিকে, লাইন এগিয়ে চলেছে। বাধ্য হয়েই বস্তার মধ্যে শাশুড়িকে শুইয়ে চারদিক ধরে আমরা ডাক্তারবাবুর কাছে নিয়ে যাই। 

    উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মতো পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে ট্রলি, হুইল চেয়ারের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাজারেরও বেশি রোগীর জন্য মাত্র ২৭টি ট্রলি। হাসপাতালের এক প্রবীণ চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে চারদিকে নতুন নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। কোথাও ভালো ঘর ভেঙে সেটির সংস্কার করা হচ্ছে। এ ধরনের কাজেই কর্তৃপক্ষের বেশি ব্যস্ততা। রোগী পরিষেবা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। অহেতুক সংস্কারের কাজ না করে সেই টাকায় পর্যাপ্ত ট্রলি ও হুইল চেয়ার কেনা দরকার। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ২৭টি ট্রলি রয়েছে। অনেক সময় ইন্ডোরে ট্রলি নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। অভিযোগ, ওয়ার্ডের রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দালালরা টাকার বিনিময়ে সেই ট্রলি ব্যবহার করছে। কয়েক মাস আগে লিখিত এমন অভিযোগ পেয়েও কর্তৃপক্ষের টনক যে নড়েনি তা এদিনের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। 

    হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ট্রলি কিছুটা কম রয়েছে। রোগীরা এসে ট্রলি পাচ্ছেন না। কোথায় সমস্যা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)