• প্রাচীন দুর্গাবাড়ি পাড়ার দেবী দুর্গাকে দর্শন করেই শুরু হয় পুজো পরিক্রমা
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সোমেন পাল, গঙ্গারামপুর: গঙ্গারামপুরের শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাবাড়ি পাড়ার দেবী দর্শন করেই শহরবাসীর শুরু হয় পুজো পরিক্রমা। পঞ্চমুণ্ডির আসনে পুজো হয় শতাব্দী প্রাচীন গঙ্গারামপুরের দুর্গাবাড়ি পাড়ায়। 

    দেশভাগের আগে গঙ্গারামপুর ছিল পূর্ববঙ্গের অধীনে। প্রায় চারশো বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। লোকশ্রুতি রয়েছে যে, চারশো বছর আগে গঙ্গারামপুরের জঙ্গলে এক সাধু থাকতেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিজের হাতে দুর্গা মূর্তি বানিয়ে পঞ্চমুণ্ডির আসনে বৈষ্ণবমতে পুজো শুরু করেন তিনি। পূর্ববঙ্গের রাজা গণেশ বিষয়টি জানতে পারেন। রাজা গঙ্গারামপুরের এক জমিদারকে বিষয়টি জানিয়ে পুজোতে সাহায্য করার নির্দেশ দেন। গঙ্গারামপুরের জমিদারের নির্দেশে ওই সাধু দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। 

    শোনা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল ছিল  গঙ্গারামপুরের জঙ্গল। সাধুর মৃত্যুর পর জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া বিপ্লবীরা ওই পুজো চালিয়ে যান। বন্ধুদের নিয়ে বিপ্লবী স্বর্ণকমল মিত্র এই পুজো করেন বহুবছর। 

    জঙ্গল কেটে ধীরে ধীরে জনবসতি হয়েছে। গড়ে উঠেছে গঙ্গারামপুর শহর। সেই পুজো এখনও হয়ে আসছে শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। সেই পুজো এখন সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। পুজোর দিন প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার পরিয়ে দেবীর বরণ করে পুজো হয় প্রাচীন পঞ্চমুণ্ডির আসনে। নতুন মন্দির হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। দুর্গাবাড়ির প্রতিমা পুনর্ভবা ঘাটে নিরঞ্জন দেওয়ার পরই শহরের বাকি প্রতিমার নিরঞ্জন হয়। কয়েক শতাব্দী ধরে এই রীতি পালন করে আসছেন গঙ্গারামপুরের মানুষ।

    রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের বাড়ির পাশেই এই পুজো হয়। তাই মন্ত্রীও সপরিবারে এই পুজোয় থাকেন। 

    পুজো কমিটির সভাপতি তথা গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র বলেন, এটি শতাব্দী প্রাচীন পুজো। পুরনো রীতিনীতি মেনেই পুজো হয়। আগে মাটির বেদি ছিল। এখন তার উপর দিয়ে পাকা করা হয়েছে। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়িতে রান্না বন্ধ থাকে। পুজো মণ্ডপেই খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অগণিত ভক্ত আসে এই মন্দিরে। আগে নবমীতে ছাগ বলি হতো। এখন শুধু কুমড়ো বলি দেওয়া হয়। 
  • Link to this news (বর্তমান)