• একাদশীতে প্রতিমা বিসর্জনের প্রথা রয়েছে হবিবপুর ব্লকের পান্ডে জমিদার বাড়িতে
    বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হবিবপুর: শুরু থেকেই কন্যা রূপে মা দুর্গাকে পুজো করে আসছেন পান্ডে জমিদার পরিবারের সদস্যরা। তাই কন্যাকে দশমীতে বিদায় নয়, একাদশীর দিন ধুমধাম সহকারে বিদায়ের প্রথা আজও মেনে আসছেন তাঁরা। ওইদিন স্থানীয় এক পুকুরে মা মৃন্ময়ীকে বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জনকে কেন্দ্র করে জমিদার বাড়ির সামনে বহু বছর ধরেই বসে মেলা। সব মিলিয়ে এবারও জমিদার বাড়িতে পুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। 

    পান্ডে পরিবারের বাস মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বৈদ্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আগ্রা হরিশ্চন্দ্রপুরে। পুজোর পাঁচ দিন, বিশেষ করে বিসর্জনের দিন জমিদার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকের তালে ধুনচি নাচ ও আদিবাসী নাচে মেতে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

    ১৯২৫ সালে অবিভক্ত ভারত, তথা বর্তমানে বাংলাদেশের নওগাঁয়ের নিতপুর গ্রামে তৎকালীন জমিদার স্বর্গীয় রঘুবীর পান্ডে প্রথম এই দুর্গাপুজো শুরু করেন। পুজোকে কেন্দ্র করে বাড়িতে রীতিমতো চাঁদেরহাট বসত সেই সময় বলে জানান বর্তমান সদস্যরা। নামী ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত হতেন এই পুজো উপভোগ করতে। পরবর্তীতে দেশভাগের আগে ১৯৪৬ সালে জমিদারের দুই ছেলে সুনীল পান্ডে ও ধনঞ্জয় পান্ডে দেবীর কাঠামো নিয়ে বর্তমান হবিবপুরের আগ্রা হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় তাঁদের বাগান বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে তাঁদের নিজস্ব জায়গাতে নওগাঁ এলাকার প্রচুর গরিব মানুষকে তাঁরা আশ্রয় দিয়েছিলেন।

    শুরু থেকেই জমিদার রঘুবীরবাবু ষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের ঘট আনতে গিয়ে পাঁচ রাউন্ড এবং একাদশীর দিন প্রতিমা বিসর্জন করতে যাওয়ার সময় ছয় রাউন্ড শূন্যে বন্দুকের গুলি ছুড়তে ছুড়তে গন্তব্যে পৌঁছতেন। সেই প্রথা ধারাবাহিক ভাবে মেনে আসছিলেন বর্তমান পরিবারের সদস্যরা। তবে ২০১৭ সালে রঘুবীরবাবুর বড় পৌত্র সুভাষ পান্ডে মারা যাওয়ার পর সেই প্রথা এখন বন্ধ রয়েছে। পুনরায় সেটি আবার চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। জমিদার পরিবারের বর্তমান সদস্য সঞ্জীব পান্ডে বলেন, দেবীর পুজোতে নানা দায়িত্ব পালন করি। পুজো উপলক্ষ্যে দেশ, বিদেশ থেকে আত্মীয়রা আসেন। স্থানীয় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। সকলের জন্যই প্রথা মেনে আজও প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)