নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: এবার পাটের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ফলে রাস্তার ধারে ইতিউতি ঢালাও পাট পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। সময়ে সময়ে যেমন দাম মিলছে, তেমন বিক্রি করছেন চাষিরা। রাতের অন্ধকারে সেই পাট চুরি করতে গিয়ে ধানতলা থানার কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ল এক চোর। তবে তাৎপর্যের বিষয়, পাট চুরি করতে চোর এসেছিল বিলাসবহুল স্করপিও গাড়ি নিয়ে! যা দেখে তাজ্জব পুলিশ। দামি গাড়িতে পাট চুরির এই অভিনব ঘটনায় বড়সড় রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই আজব পন্থায় চুরির রহস্যদ্ঘাটন করতে চাইছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার তাকে রানাঘাট মহকুমা আদালতে পেশ করলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ধানতলার ভাতভাঙা গ্রামে গভীর রাতে নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল সাদা এসইউভি একটি গাড়ি। রাস্তার ধারে শুকোতে দেওয়া পাট পটাপট তুলে সেই গাড়িতে ভরছিলেন চালক। আচমকা বিষয়টি নজরে আসে ধানতলা থানার টহলরত পুলিশের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম সায়ন রায় (৩০)। বাড়ি কুলগাছি অঞ্চলে। বুধবার রাত তিনটে নাগাদ ধানতলার ভাতভাঙায় নিজের গাড়ি নিয়ে গিয়ে পথের ধারে শুকোতে দেওয়া পাট বোঝাই করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে সে। বাজেয়াপ্ত হয় গাড়ি ও প্রায় তিন হাজার টাকার পাট। চাষিরা অভিযোগ করেন, এ বছর ফসল ভালো হলেও রাস্তায় অঢেল পড়ে রয়েছে শুকোতে দেওয়া পাট। কিন্তু প্রায়ই তা উধাও হয়ে যাচ্ছিল। তদন্তে উঠে আসে, দীর্ঘদিন ধরেই নিজের গাড়ি নিয়ে গ্রামাঞ্চলে ঘুরে পাট চুরি করত ধৃত। পরে সেগুলি বিক্রি করে মাসে মোটা টাকা রোজগারের পথ তৈরি করে সে। বিষয়টি আপাতদৃষ্টে ছোট হলেও নিয়মিত পাট সাবাড় করতে পারলে মাসের শেষে মোটা টাকা রোজগার নিশ্চিত।
কিন্তু দামি গাড়ির মালিক পাট চুরি করছে, এই বিষয়টিতে খটকা লাগে প্রথমে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করছে, গাড়ি কেনার পর কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় চুরির পথ বেছে নেয়। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ আধিকারিকদের কথায়, ধৃতকে জেরা করে বোঝার চেষ্টা চলছে এটি নিছকই ব্যক্তিগত অপরাধ, নাকি এর পেছনে কোনও সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে। পাশাপাশি, সায়নের নামে এর আগে কোনও অপরাধমূলক মামলা আছে কি না, তাও দেখা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র