বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরাই এবার থিম মেকার পিকনিক গার্ডেনের ৩৯ পল্লিতে
বর্তমান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ওরা আর পাঁচজনের মতো নয়। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। তবে ওদের থিমের মায়াজালে এবার শহরে সেজে উঠছে আস্ত একটি পুজো। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুরাই এবার পিকনিক গার্ডেন ৩৯ পল্লির অষ্টাদশ বর্ষের পুজোর থিম মেকার। এই পুজো হল তাদের চিন্তাভাবনা, তাদের সৃজনশীলতার উদযাপন। তাদের হাতে বোনা জাদুতে ঝলমল করছে পিকনিক গার্ডেনের এই পুজো মণ্ডপ।
ডাক্তারি পরিভাষায় এই শিশুদের বলা হয় স্পেশাল চাইল্ড। স্পেশাল অর্থাৎ ওরা এমন কিছু পারে, এমন কিছু ভাবে, এমন কিছু সৃষ্টি করে, যা সাধারণ মানুষ অনেক সময় ভাবতেই পারে না। প্রতিমার চোখ থেকে মণ্ডপ সজ্জা এবং ভিতরে প্রাণবন্ত ক্যানভাস পেইন্টিংয়ে প্রতিটি কোণে তাদের দক্ষতার প্রতিফলন ঘটেছে। সত্যি বলতে কী, সমাজ ওদের কী চোখে দেখল, তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তারা নিজেদের হাতে কেমন সাজাল, একবার দেখে আসতেই হবে আপনাকে।
৩৯ পল্লির এই বছরের থিম, আমরাও পারি। শিল্পী স্নেহাশিস দাসের তত্ত্বাবধানে শিশুরা প্রতিটি ভাবনাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। পুজো কমিটির সভাপতি গৌতম রায়চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে ওরা অনুপ্রাণিত করেছে। এই বছর যাবতীয় সাজসজ্জা তাদেরই সৃষ্টি। তাদের প্রাণোচ্ছ্বল হাসি, সুখ দেয় শান্তি দেয় মনকে।’ শিল্পী স্নেহাশিস দাস বলেন, ‘তারাই দেবীর চোখ এঁকেছে, আমি চাই তারা কতটা সক্ষম, সেটা সকলের সামনে তুলে ধরতে।’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আন্তরিকভাবে এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছে। সংস্থার তরফে সমিত সাহা বলেছেন, ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা সব কিছুই করতে পারে, যদি আমরা তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। এই সুযোগটি তৈরির জন্য কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই।’
ওরা মনের চোখ দিয়ে এঁকেছে প্রতিমার চোখ। কারও কাঁপা কাঁপা হাতে রং পড়েছে প্রতিমার গায়ে। আর সেই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের হাতেই মৃন্ময়ী দেবী হয়ে উঠেছেন চিন্ময়ী।