• এসআইআর নিয়ে পুজোর পরই বুথে নামছেন সিপিএমের বিএলএ-রা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পুজোর পরই বুথে নামছে সিপিএমের বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ)-রা। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) সামনে রেখে রাজনৈতিকভাবে মাঠে ঝাঁপাতে চাইছে বাম শিবির। তবে সর্বত্র বিএলএ নিয়োগ করা সিপিএমের পক্ষে সম্ভব নয়, তাই শরিক দলগুলির কাছে সাহায্যের আর্জি জানালেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

    বুধবার মৌলালির যুব কেন্দ্রে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় সেলিম বলেন, ‘রাজ্যের বাকি বামপন্থী দলগুলির জাতীয় স্বীকৃতি না থাকলেও তাঁদের শক্তি আছে। একার পক্ষে আমাদের পক্ষে সব বুথ সামলানো সম্ভব নয়। তাই আশা করি, বাকি দলগুলোও নিজেদের শক্তি নিয়ে এই লড়াইয়ে আমাদের পাশে থাকবে।’

    একইসঙ্গে তিনি আক্রমণ শানান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। সেলিমের অভিযোগ, কমিশন আসল কাজ না করে শাসক দলের স্বার্থে কাজ করছে। তাঁর বক্তব্য, ‘মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে দিয়ে হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছে। জ্ঞানেশ কুমারের যা কাজ করা উচিত, তা না করে, অন্য কিছু করছেন। এই কমিশনই একাধিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দলদাসের ভূমিকা পালন করেছে। অসংখ্য মৃত মানুষের নাম আছে ভোটার তালিকায়। প্রতিবছর আমরা ভূতুড়ে ভোটারের তালিকা দিয়েছি। তারপরও কিছুই ঠিকঠাক করেনি। ভোটার লিস্ট স্যানিটাইজ করার কাজ করেনি।’

    এদিন সেলিমের আক্রমণের নিশানা বাদ যায়নি কেন্দ্র সরকারও। তিনি বলেন, ‘জনধন যোজনার মাধ্যমে মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে সরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজের দিকে মন না দিয়ে ক্রমাগত ইস্যু ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, চলছে লুঠ। এই পরিস্থিতিতে মানুষকেই এক হয়ে লড়াই করতে হবে।’

    ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং এসইউসিআই-এর রাজ্য সম্পাদকরা। যদিও অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়।

    সিপিআই-এর রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ‘মোদীর নেতৃত্বে দেশে আরএসএস সরাসরি শাসন চালাচ্ছে। স্বাধীনতার সময় দ্বিজাতি তত্ত্বের জন্ম দিয়েছিল তারাই। আজ নানা বিভাজনের রাজনীতি করে নিজেদের শাসন কায়েম রাখার চেষ্টা করছে।’

    এসইউসিআই-এর রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘নাগরিকত্ব নির্ধারণ করার অধিকার নির্বাচন কমিশনের নেই। অথচ সেই অধিকার ফলানোর চেষ্টা হচ্ছে। যাঁরা নাগরিক হয়েও এখন প্রমাণ চাইছেন, তাঁদের উচিত মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দেওয়া।’

    সভায় লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বিহারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সতর্ক করে বলেন, ‘এসআইআর-এর আড়ালে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।’

    সব মিলিয়ে পরিষ্কার, এসআইআরকে ঘিরে ভোটার তালিকার লড়াইকে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করে পুজোর পর থেকেই রাজ্যজুড়ে সক্রিয় হতে চাইছে সিপিএম। আর এই লড়াইয়ে শরিক বাম দলগুলোকেও পাশে চাইছে আলিমুদ্দিন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)