শহরে ফের বেপরোয়া গাড়ির তাণ্ডব গভীর রাতে। বুধবার রাত ১২টা নাগাদ নিমতলা ঘাট স্ট্রিটে চা ও লিট্টির একটি দোকানের ভিতরে একটি গাড়ি ঢুকে পাঁচিলে ধাক্কা মারে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়ানো পাঁচ জন আহত হন। স্থানীয়দের অভিযোগ, গাড়ির আরোহীরা সবাই মত্ত অবস্থায় ছিলেন।
গাড়িচালক কৃশানু দাশকে গ্রেফতার করেছে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ। তাঁর বাড়ি বড়তলা থানা এলাকায়। কৃশানু ছাড়া আরও দু’জন গাড়িতে ছিলেন। আরোহীরা মত্ত অবস্থায় ছিলেন কিনা, দেখছে পুলিশ। আহত পাঁচ জনকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চার জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও শুভেন্দু বিশ্বাস নামে এক যুবক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাড়ি নদিয়ায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে চায়ের দোকানে ঘটনাটি ঘটেছে, দোকানটি তখন বন্ধ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। দোকানের এক কর্মী ধীরজ সাহু বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজো ছিল বলে নিমতলা ঘাট তখনও অন্য দিনের তুলনায় বেশি জমজমাট ছিল। দোকানের কয়েক জন খদ্দের চা, লিট্টি খাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখি, একটি গাড়ি আমাদের দোকানের দিকে আসছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দোকানের ভিতরে একটি দেওয়ালে ধাক্কা মেরে সেটি ভেঙে দেয়। দোকানের সামনে দাঁড়ানো কয়েক জন গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন।’’
ধীরজের দাবি, গাড়িতে থাকা তিন জনেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা গাড়ির আরোহীদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ আহতদের আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ধীরজ বলেন, ‘‘এক জনের পাঁজরে গুরুতর আঘাত লেগেছে। তবে যে গতিতে গাড়িটি দোকানে ঢুকে পড়েছিল, তাতে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’’ অভিযোগ, গাড়িটি ট্র্যাফিক আইন না মেনে ‘নো এন্ট্রি’ রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়েছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় এই ধরনের বেপরোয়া গাড়ির চলাচল লেগেই থাকে। বেশি রাতে প্রমোদভ্রমণ চলে ওই এলাকায়। তাঁদের অনেকেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালান। হেলমেট ছাড়া মোটরবাইকে তিন আরোহী, এমন দৃশ্যও প্রায়ই দেখা যায়। নিমতলা ঘাট স্ট্রিট একমুখী হলেও দু’দিক থেকে গাড়ি যাতায়াত করতেও দেখা যায়। ভূতনাথ মন্দিরের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড করলেও অনেক সময়েই বেশি রাতে নিয়ম মানা হয় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
যদিও পুলিশের দাবি, নিমতলা শ্মশানে যে হেতু সারা রাত মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে, তাই এলাকায় বাড়তি সর্তকতা থাকেই। পুলিশি টহলদারিও রাতভর থাকে। হেলমেটহীন মোটরবাইক আরোহী বা নো এন্ট্রিতে ঢুকে পড়াগাড়ির চালককে নিয়মিত জরিমানাও করা হয়।