• ১৫ দিনে লেহ থেকে অরুণাচল, পাড়ি সাইকেলে
    আনন্দবাজার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পশ্চিমে লেহ থেকে পূর্বে সুদূর অরুণাচল প্রদেশের কিবোথো গ্রাম। সময় মাত্র ১৫ দিন। হিমালয়ের কোল ঘেঁষে প্রায় ৪০০০ কিলোমিটার রাস্তা একা সাইকেলে পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়তে কোমর বাঁধছেন ‘মাউন্টেন ট্রেল রানার’ অভিষেক তুঙ্গা। আগামী ২২ তারিখ সেই লক্ষ্যেই লেহ থেকে ট্রান্স হিমালয় অভিযান শুরু করতে চলেছেন মেঘনাথ সাহা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষক অভিষেক। সব ঠিক থাকলে ৬ অক্টোবর শেষ হবে তাঁর একক অভিযান।

    আদতে তমলুকের ছেলে, অধুনা যাদবপুরের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের অভিষেকের এই স্বপ্ন পূরণ করতে লেহ্‌ (৩৫০০ মিটার) থেকে ট্যাগলাং লা (৫৩০০ মিটার)-সহ আরও পাঁচটি পাস পেরিয়ে সাইকেলে মানালি পৌঁছতে হবে তাঁকে। দুর্যোগের জেরে ভাঙাচোরা পথ পেরিয়ে এর পরে তাঁকে নেমে আসতে হবে চণ্ডীগড়ে। অভিষেক বলছেন, ‘‘প্রথমে নেপাল দিয়েই অভিযানের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অশান্ত পরিস্থিতির জেরে ওই দেশকে এড়িয়ে চলতে হচ্ছে। ফলে চণ্ডীগড় থেকে হিমালয়ের গা ঘেঁষে উত্তরপ্রদেশ, শিলিগুড়ি, অসমের সমতল হয়ে ফের অরুণাচলে গিয়ে পাহাড়ে উঠতে হবে।’’

    পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে ট্রান্স হিমালয় অভিযান করা নতুন নয়। কয়েক বছর আগে হৃদয়পুরের চন্দন বিশ্বাস এবং নদিয়ার করিমপুরের জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস এই অভিযান করলেও তাতে সময় লেগেছিল অনেকটাই বেশি। অভিষেক সেই পথ সাইকেলে পেরোতে চাইছেন মাত্র ১৫ দিনে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক অভিষেকের কথায়, ‘‘কিছু গোলমাল হলেই পুরো সময়ের হিসাব বদলে যাবে। অভিযান সফল হলে অনেককেই উদ্বুদ্ধ করতে পারব যে, চাকরি করতে করতেও অ্যাডভেঞ্চার করা যায়।’’

    তবে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের জীবনে এই প্রথম নয়। মাত্র ২০ ঘণ্টায় দৌড়ে মানেভঞ্জন-সান্দাকফু-মানেভঞ্জন, ২০ ঘণ্টায় ইয়োকসাম-জ়োংরি টপ-ইয়োকসাম, প্রায় ১৫ ঘণ্টায় দৌড়ে মানেভঞ্জন-সান্দাকফু-ফালুট হয়ে গোর্খে— এমন নানা কৃতিত্ব ঝুলিতে রয়েছে এই পাহাড়ি দৌড়বীরের। তবে এ বারের অভিযানে বাধার পাহাড়কেও যে দ্রুত টপকাতে হবে, তা মানছেন তিনি। স্বপ্ন সফল করতে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হবে তাঁকে। পেরোতে হবে একাধিক পাস। সাইকেলের টায়ার পাংচার থেকে শুরু করে খারাপ রাস্তা, অতি উচ্চতাজনিত অসুস্থতার আশঙ্কা থেকে প্রতিদিন থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা, শারীরিক অসুস্থতা— সব কিছুই একা সামাল দিতে হবে। অভিষেক বলছেন, ‘‘সহনশীলতার বড় পরীক্ষা দিতে হবে। তাই যোগব্যায়াম, শক্তি বাড়ানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সাইকেল ছাড়া সঙ্গে থাকবে চার্জার, রান্নার সরঞ্জাম আর টায়ার সারানোর যন্ত্রপাতি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)