আর জি করের পড়ুয়া-চিকিৎসক খুনের মামলার তদন্তে কলকাতা পুলিশের চার অফিসার ঠিক কী করেছিলেন, তা খুঁজে দেখতে নগরপালকে নির্দেশ দিলেন শিয়ালদহ অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। কোর্ট সূত্রের খবর, এই নির্দেশের পাশাপাশি সিবিআইকে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতেও বলেছেন তিনি। এই মামলায় সঞ্জয় রায়কে মূল অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করলেও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বিষয়টি এখনও পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়নি সিবিআই।
আর জি করের ঘটনায় ধৃত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দিয়েছিলেন শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। সেই রায়ে তিনি কলকাতা পুলিশের চার অফিসারের গাফিলতির কথাও উল্লেখ করেছিলেন। পাশাপাশি সিবিআইও যে কলকাতা পুলিশের তদন্তের বাইরে আলাদা করে বিশেষ কোনও তদন্ত করেনি, সে কথাও উল্লেখ করেছিলেন বিচারক। রায় ঘোষণা হলেও তদন্ত নিয়ে সন্তুষ্ট হয়নি নির্যাতিতার পরিবার। নির্যাতিতার বাবা-মা এর মধ্যেই পুনরায় তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছেন। শিয়ালদহ কোর্টেও সে কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
গত ১২ সেপ্টেম্বর শিয়ালদহ কোর্টের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (এসিজেএম) কোর্টে মামলার শুনানিতে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে এবং রাজদীপ হালদার প্রশ্ন তোলেন যে, কোর্টের রায়ে কলকাতা পুলিশের চার অফিসারের গাফিলতির কথা বলা হলেও কেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি লালবাজার? সিবিআই তদন্তের গাফিলতির প্রসঙ্গও তোলেন তাঁরা। তার পরেই এসিজেএম তদন্তে ওই চার জনের ভূমিকা খতিয়ে দেখে নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর।
আদালতের আরও নির্দেশ, সিবিআই এখনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত করছে। তাই সিসি ক্যামেরা এবং ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে তাদের সচেতন হতে হবে। পরবর্তী শুনানিতে বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করতেও এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার পর থেকেই সিবিআই তদন্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ নির্যাতিতার বাবা-মা। গত ১২ সেপ্টেম্বর শিয়ালদহ কোর্ট চত্বরে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সীমা পাহুজার দিকে আঙুল উঁচিয়ে রীতিমতো তেড়ে গিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা। সীমাকে ‘শয়তান’ও বলেন তিনি। পরে অবশ্য নির্যাতিতার মা এবং তাঁদের আইনজীবীরা নির্যাতিতার বাবাকে সামলে নেন। সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ সাজা বা প্রাণদণ্ড চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। সেই মামলা ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন।