এক নির্যাতিতা এগিয়ে এসে অভিযোগ করায় ভয় ভেঙেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজারের হাতে নিগৃহীতা একাধিক মহিলা কর্মী মুখ খুলেছেন। এ বার ধর্ষণে ধৃত ওই যুবকের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার তমলুক জেলা আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন সংস্থার চার পুরুষ কর্মী। তাঁরাও ধৃতের হাতে যৌন হেনস্থার শিকার বলে অভিযোগ।
কলকাতা হাই কোর্টের একাধিক আইনজীবীর মতে, আপাত ভাবে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় পুরুষের বিরুদ্ধে পুরুষকে যৌন হেনস্থা বা ধর্ষণের মামলা দায়েরের বিধান নেই। তেমন ঘটনার ক্ষেত্রে কী ভাবে আইনি পদক্ষেপ করা যায়, সে ব্যাপারে বিশদ আলোচনা, আইনের ধারার গভীর বিশ্লেষণ প্রয়োজন। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে মানসিক নির্যাতন ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে কিছু করানোর ধারা মামলায় যুক্ত করার আর্জি জানানো হবে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, বাজেয়াপ্ত মোবাইলের ভিডিয়োয় স্পষ্ট, ধৃত ফেসিলিটি ম্যানেজার (বর্তমানে বরখাস্ত) মহিলাদের পাশাপাশি, একাধিক পুরুষ কর্মীকেও যৌন চাহিদা পূরণে বাধ্য করত। কাজ কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে চলত অত্যাচার। জবানবন্দি দেওয়া এক পুরুষ কর্মী বলেন, “লজ্জায়, ভয়ে এত দিন অভিযোগ জানাতে পারিনি। সত্যিটা সামনে আনতে আমাদের বক্তব্য আদালতে জানানো প্রয়োজন বলে মনে করেছি। বিচারককে যাবতীয় অত্যাচারের কথা জানিয়েছি।” এ দিনও সংস্থার কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
ধৃতের কড়া শাস্তির দাবিতে এ দিন সংশ্লিষ্ট ব্লকে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডেকেছিল এসইউসি। কিছু ক্ষণ অবরোধ হয়। তবে দোকানপাট খোলা ছিল। বিকেলে এলাকায় ঝাঁটা হাতে বিজেপির মহিলা কর্মীদের মিছিলে ছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে তিনি বলেন, “আর জি কর এখনও ছাড়িনি। এ ঘটনারও শেষ দেখব।” তৃণমূলের তমলুক জেলা সভাপতি সুজিত রায়ের দাবি, “অভিযুক্ত দলের কেউ নয়। শুভেন্দুর বক্তব্য ভিত্তিহীন।”