• যুবদের ‘মৃত ভোটার’ তোপ, ফের সরব অধীর-সেলিমও
    আনন্দবাজার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • কর্নাটকের আলান্দের ‘উদাহরণ’ দিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী যে দিন নতুন করে ‘ভোট চুরি’ নিয়ে সরব হয়েছেন, সে দিনই যুব কংগ্রেস বাংলার ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ ব্যক্তিদের উপস্থিতি-সহ বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ তুলল। সেই সঙ্গে তারা নিশানা করেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলকেও। ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধনের (এসআইআর) নামে বৈধ ভোটারের অধিকার কাড়া যাবে না বলে সরব হয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিএমও।

    রাহুলের ‘ভোট চোর, গদি ছোড়’ দাবির সমর্থনে বাংলা-সহ দেশ জুড়ে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ অক্টোবর গণ-সই সংগ্রহ করছে কংগ্রেস। পাশাপাশি, সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের নির্দেশে দেশ জুড়ে এক মাস ধরে দরজায়-দরজায় গিয়ে ‘ভোটার যাচাই’ করছেন যুব নেতৃত্ব। তাঁরা জানিয়েছেন, গত ১০ তারিখ থেকে বাংলার প্রায় ১০০টি বিধানসভায় এই কর্মসূচি চলছে। সব ক’টি বিধানসভাতেই তা হবে। এখনও পর্যন্ত কী কী বিষয় উঠে আসছে, তা-ই বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সম্পাদক তথা বাংলার ভারপ্রাপ্ত নেতা এহসান আহমেদ খান। ছিলেন প্রদেশ যুব কংগ্রেসের নেতা সৌরভ প্রসাদ, শাহিনা জাভেদ, কাশিফ রেজ়া, অর্ঘ্য গণ, ইমরান খান, বাবুল শেখরা। তাঁদের দাবি, অনেক জায়গাতেই মৃত্যুর ১০ বছর পরেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে। আবার ভোটার তালিকার তথ্য অনুযায়ী কোনও ঠিকানায় গিয়ে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ দিন বাড়ি বন্ধ। ভোটারদের খোঁজ নেই। পরে এই সব তথ্য সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনের কাছে দেবে যুব কংগ্রেস। এই সূত্র ধরেই কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলকেও নিশানা করেছে তারা। এহসান বলেছেন, “এক দিকে ‘ভোট চুরি’ হচ্ছে। পাশাপাশি, বাংলাতেও ভোটের দিন সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয় না। ছাপ্পা, খুন-সন্ত্রাস চলে।”

    এসআইআর প্রক্রিয়ার নামে ভোটাধিকার কেড়ে নিতে দেওয়া হবে না বলেও ফের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কংগ্রেস। দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “এসআইআর-এর নামে বৈধ ভোটারের ভোটাধিকার কাড়া চলবে না। পরিকল্পিত ভাবে ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলকে সুযোগ করে দেওয়া যাবে না। আমরা দেশে ও রাজ্যে ভোট চুরি হতে দেব না!”

    মুর্শিদাবাদ জেলারই ফরাক্কায় এ দিন ‘নদী বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও‘ কর্মসূচিতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ভোটার তালিকা নিয়ে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন কেন্দ্র ও রাজ্যকে। তাঁর অভিযোগ, “ভোটার তালিকা থেকে ভোট গণনা, গোটাটাই কারচুপিতে ভরা। নির্বাচন কমিশন যখন শাসক দলের হয়ে কাজ করে, তখন গোটা ব্যবস্থাটা কলুষিত হয়ে পড়ে। এখন এসআইআর-এর নামে যা বলা হচ্ছে, সকলের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি করা হচ্ছে যে, ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।’’ মৃত ভোটার নিয়েও ফের সরব হয়েছেন সেলিম। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিটি বুথে মৃত ভোটার, ভুয়ো ভোটার আছে। কমিশনের কাজ ছিল মৃত ও ভুয়ো ভোটার মুক্ত ভোটার তালিকা করা। তার বদলে দেখা গিয়েছে, কিছু কিছু বুথে ভোটের ব্যবধান বাড়াতে ১০ থেকে ২০% ভোটার ঢুকিয়ে রাখা হচ্ছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য ভোট লুট করতে হচ্ছে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের তোপ, যে কমিশনের দায়িত্ব ছিল নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর, তারাও এই লুটের অংশ হয়ে যাচ্ছে!
  • Link to this news (আনন্দবাজার)