• পুজোর আবহে সুরা প্রেমীদের জন্য সুখবর!  দেশি মদ এবার নতুন স্বাদে, নতুন বোতলে...
    আজকাল | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোয়ার পরিচয়ের সঙ্গে ফেনি এক অনন্য নাম। কখনও নীট, কখনও লবণ-সোডার সঙ্গে, ফেনির চুমুকেই বোঝা যায় যে আপনি গোয়াতে আছেন। কিন্তু এখন এই দেশি মদ গোয়ার সীমানা ছাড়িয়ে ঢুকতে চলেছে ভারতের আরেক শহরে। আর সেটি হলো ‘নাম্মা বেঙ্গালুরু’। ‘কাজুলো’-র প্রতিষ্ঠাতা ও খ্যাতনামা ‘ফেনি ডক্টর’ হ্যানসেল ভাজ জানালেন, ভারতের পানীয় সংস্কৃতির একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে বেঙ্গালুরু। 

    “এখানকার এক্সসাইজ ব্যবস্থা দেশের মধ্যে অন্যতম স্বচ্ছ ও সহজ। ফলে যদি কোথাও শক্তিশালী ক্রাফট ড্রিঙ্কস ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠার সুযোগ থাকে, তবে তা বেঙ্গালুরুতেই সম্ভব,” বলেন ভাজ। তিনি তাই নিয়ে এলেন রেডি-টু-ড্রিঙ্ক (RTD) প্রিমিয়াম ফেনি ককটেল—‘মিস্টার জেরি’স এক্স কাজুলো এল ক্লাসিকো’। এই পানীয় ইতিমধ্যেই শহরের অভিজাত বারে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে।

    ফেনির জন্য ককটেল পথ কেন?

    খ্যাতনামা মিক্সোলজিস্ট নিল আলেকজান্ডার বলেন, “ফেনি একেবারেই ভারতীয়—এটির উৎস, টেরোয়ার, আর কাহিনি অনন্য। সমসাময়িক বারে সাইট্রাস-ফরওয়ার্ড ড্রিঙ্কসে ফেনি দারুণভাবে মিশে যেতে পারে। জিন বা ভদকার মতো ‘স্ট্যান্ডার্ড ইস্যু’ নয় বলেই এটি আলাদা হয়ে ওঠে।”

    ভাজ অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, প্রথমবার ফেনি খেতে গিয়ে অনেকের কাছে এটি একটু ভারী, এমনকি ভীতিকরও মনে হতে পারে। তাই তিনি বোঝাতে চান যে, ককটেলের মাধ্যমে সহজপথেই নতুনদের কাছে পৌঁছানো দরকার। তারপর ধীরে ধীরে ফেনির প্রতি আনুগত্য তৈরি হবে।“কাজু ফেনির স্বাদ সাহসী, মাটির মতো গভীর, রেজিন জাতীয় টেক্সচার রয়েছে, আর শেষ পর্বে একেবারে আলাদা রেশ থেকে যায়। ফলে এটি এমন ককটেলে দারুণ মানায় যেখানে গঠন আর অন্য ধরণের  স্বাদ প্রয়োজন,” বলেন নিল।

    আরও পড়ুন: এবার শিক্ষিত বেকারদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা ভাতা! বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

    ভাজের মতে, ফেনি গোয়াতে পর্যটকের অন্যতম টান। কিন্তু তিনি চান এটি গোয়া ছাড়িয়ে সারা দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পৌঁছাক। তাঁর দাবি, “ফেনির উৎপাদন প্রক্রিয়া, উৎস উপাদান আর ঐতিহ্য একে বিশ্ববাজারে অদ্বিতীয় করেছে। আন্তর্জাতিক পানীয় জগত ইতিমধ্যেই বুঝতে শুরু করেছে—ভারতের হাতে ফেনির মতো এক অনন্য কার্ড রয়েছে।” ফেনির পাশাপাশি ভাজ জানালেন আরও এক চমকপ্রদ খবর। তিনি বললেন, “উরাক্কা হলো বিশ্বের অন্যতম ‘বেস্ট কেপট সিক্রেট’। এবার এটি বোতলবন্দি হয়ে আসছে।”

    উরাক্কা হল কাজু ফেনি তৈরির প্রথম ডিস্টিলেট। এতদিন এটি শুধুই স্থানীয় বা রাস্তার ধারের টোডি-দারুর দোকানে পাওয়া যেত। বোতলবন্দি হয়নি কখনও। কিন্তু ২০২৬ সালে ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার উরাক্কা বৈধভাবে বোতলে বাজারে আসছে। ভাজের ভাষায়, “এই ঘটনাই গোয়ার ডিস্টিলিং সংস্কৃতির ইতিহাস নতুনভাবে লিখবে।” বার ও হোটেল শিল্প বরাবরই উরাক্কার ধারাবাহিক এবং নিয়ন্ত্রিত সরবরাহ চেয়েছিল। অবশেষে সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে।

    গোয়ার মাটি থেকে জন্ম নেওয়া দেশি মদ ফেনি ও উরাক্কা এখন আর কেবল সীমিত প্রাদেশিক স্বাদের মধ্যে আটকে থাকছে না। বেঙ্গালুরু থেকে শুরু করে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে চলেছে এর অনন্য স্বাদ আর ইতিহাস। গোয়ার পানীয় সংস্কৃতি এবার ভারতকে বিশ্বমঞ্চে নতুন পরিচয়ে তুলে ধরতে প্রস্তুত।
  • Link to this news (আজকাল)