নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: আড়াই মাসের মেঘলার খুনসুটিতে মুগ্ধ ডুয়ার্সে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। একইসঙ্গে ওই একরত্তির দুষ্টুমি তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে গোরুমারা জঙ্গলের মেদলা ক্যাম্পে থাকা অরণ্য, ডায়নার মতো কুনকি হাতির দল। মেঘলার দস্যিপনা সামলাতে ব্যস্ত মাহুত থেকে বনকর্মীরা। মেয়ের দুষ্টুমিতে মাঝেমধ্যে রেগে গেলেও পরক্ষণেই কাছে টেনে আদরে ভরিয়ে দিতে কার্পণ্য করছে না মেঘলার মা রামি। তিনমাস জঙ্গল বন্ধ থাকাকালীন মেদলা ক্যাম্পে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে বনদপ্তরের ডিপার্টমেন্টাল হাতি রামি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে জঙ্গল খুলতেই মেদলায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সে। ভালোবেসে পর্যটকরা ওই হস্তি শাবকের নাম দিয়েছেন মেঘলা। পর্যটকদের দেখলেই গুটি গুটি পায়ে চলে আসছে সে। মাহুতের মৃদু বকুনিতে আবার ফিরে যাচ্ছে পিলখানায় মায়ের কাছে। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে ফের শুরু হচ্ছে মেঘলার খুনসুটি। কখনও শুঁড় দিয়ে মাহুতের হাত টেনে ধরে জঙ্গলে ঘুরতে যাওয়ার বায়না জুড়ে দিচ্ছে সে। কখনও আবার পিলখানায় অরণ্য কিংবা ডায়নার মতো পূর্ণবয়স্ক কুনকিদের সঙ্গে রীতিমতো দুষ্টুমি করতে ছাড়ছে না ওই হস্তিশাবক।কচিঘাস, আখ একটুআধটু খাওয়া শিখেছে। তবে খাওয়ায় নয়, সারাক্ষণ খেলাতেই মন মেঘলার। কিছুদিন অন্তর ওই হস্তি শাবককে দেখে যাচ্ছেন প্রাণী চিকিৎসক। ওষুধপত্র, খাবারের মেনু বদলাচ্ছে। সঙ্গে মেঘলার মা রামিরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে নিয়মিত। সন্তান পালনের জন্য রামির এখন সবেতন ছুটি চলছে। অর্থাৎ বন দপ্তরের কোনও ডিউটি দেওয়া হচ্ছে না তাকে। জঙ্গল পাহারা দেওয়া কিংবা মাহুতকে পিঠে চাপিয়ে জঙ্গল থেকে নিজেদের খাবার জোগাড় করে আনার মতো রামির যেসব কাজ ছিল, তা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন অরণ্য, ডায়নারা। মেঘলা আর একটু বড় হওয়ার পর রামি আবার ডিউটিতে ফিরবে বলে জানিয়েছেন বন কর্মীরা। গোরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেন বলেন, জঙ্গল বন্ধ থাকাকালীন মেদলাতে যেমন আমাদের কুনকি হাতি রামি সন্তান প্রসব করেছে, তেমনই দুটি গণ্ডার শাবক জন্ম দিয়েছে। জঙ্গলে তারাও মায়ের সঙ্গে গুটি গুটি পায়ে ঘুরছে। পর্যটকরা তাদের দেখা পেতেই পারেন। জঙ্গলে নতুন অতিথিদের উপর আমরা সবসময় নজর রাখছি।