• টাকা পেয়েও মাত্র ২৫ শতাংশ বাড়ি তৈরি, সুপার চেকিং-এর নির্দেশ জেলাশাসকের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সরকারি টাকা যথাসময়ে পাওয়া গিয়েছে। কাজ শেষ করার কথা অনেক আগেই। তা সত্ত্বেও আবাস যোজনায় প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ পিছিয়ে আছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। আর এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। কেন কাজ পিছিয়ে আছে, কোথায় সমস্যা এসব নিয়ে খোঁজ খবর শুরু হয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানী এ ব্যাপারে সুপার চেকিং-এর নির্দেশ দিলেন। জেলার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু হলো ওই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য। জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

    রাজ্যের অনান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানেও আবাস যোজনায় দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য এর আগে জেলা প্রশাসনের তরফে তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু চলতি মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে জেলা অনেকটাই পিছিয়ে। যদিও এর জন্য অনেকটাই দায়ী উপভোক্তারা। এমনটাই দাবি করা হয়েছে প্রশাসনিক সূত্রে। এক আধিকারিক জানান, অনেকেই টাকা পাবার পরেও বাড়ি তৈরি করতে ঢিলেমি করেছেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা উপভোক্তারা পাবার পরেও বাড়ি তৈরি করতে নামেননি। ফলে এ মাসের রিপোর্ট অনুযায়ী আবাস যোজনায় জেলাতে মাত্র ২৫ শতাংশ বাড়ি সম্পূর্ণ তৈরি হয়েছে।

    আর তার জন্য এবার জেলাশাসক নতুন নির্দেশ জারি করলেন। স্থায়ী তালিকায় থাকা উপভোক্তাদের বাড়ি যাতে দ্রুত তৈরি হয় তার জন্য নজরদারি শুরু হল। জানা গিয়েছে, স্থায়ী তালিকায় থাকা ৫৭ হাজার ৮০৯ জন উপভোক্তার উপর সুপার চেকিং করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক আয়েষা রানী এ। এর জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লকে একটি করে সরকারি প্রতিনিধি দল সরেজমিন খতিয়ে দেখা শুরু করবে। নজরদারি করবেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁদের কাজের খোঁজ খবর নেবেন একজন করে অতিরিক্ত জেলাশাসক।

    জেলা পরিষদের সহযোগিতার প্রশ্নে অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন, যেহেতু গ্রামগুলিতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে অনেকটাই গাফিলতি রয়েছে, তার জন্য সকলের কাছে গিয়ে আবার আবেদন করা হবে। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধান ও সমস্ত সদস্যকে অনুরোধ করা হবে, যাতে প্রশাসনের তরফে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে পারে।

    ইতিমধ্যেই আবাস যোজনার বাড়ি দ্রুত শেষ করার জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে জেলায় একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। আর তার পরেই জেলায় জোরদার তৎপরতা শুরু হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, যেসব বাড়ির কাজ মাঝপথে আটকে আছে সেগুলি নিয়েও রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তবে বিশেষ সূত্রে জানা গি​য়েছে, লিংটন পর্যন্ত যাঁদের বাড়ি হয়নি তাঁদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে আছে। তাঁদের আবার বাড়ি তৈরি করার জন্য বলা হবে।

    শর্ত পূরণ হলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। সরকারি নির্দেশ পালন না করার জন্য জেলায় ২২৯৭ জনকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও যাঁরা বাংলার বাড়ি প্রকল্পে কোনও কিছুই করেননি তাঁদের টাকা ফেরত দেবার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে। যদিও এর মধ্যে ২৩৮ জন টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। তবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে এ জেলা পিছিয়ে পড়ার আর একটা বড়ো কারণ একটানা বৃষ্টি। প্রশাসনের এক কর্তা এই দাবি করেছেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)