অর্ণব আইচ: অর্থাভাবে ভুগছে ছেলে! মায়ের মন তা মেনে নিতে পারেনি। তাই ছেলের ডাক শুনে গভীর রাতে গাড়ি ভাড়া করে দেশপ্রিয় পার্কের সামনে হাজির হন। সেখানেই আসে হরিদেবপুর ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাংশু বিশ্বাস। আর সেটাই পুলিশের কাছে ছিল একটা বড় সুযোগ। সেখানে পৌঁছতেই হাতেনাতে দেবাংশুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় আর এক অভিযুক্ত চন্দন মালিককে গত ১০ তারিখে বর্ধমান স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকেই দেবাংশুর খোঁজ চলছিল। নানাভাবে তাঁকে ট্র্যাক করার চেষ্টা করছিলেন তদন্তকারীরা। এমনকী পরিবারের উপরেও নজর ছিল। অবশেষে পুলিশের জালে হরিদেবপুর ধর্ষণ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত দেবাংশু।
অভিযোগ, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে পার্টি করার প্রলোভন দেখিয়ে নির্যাতিতাকে রিজেন্ট পার্ক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান চন্দন এবং দেবাংশু। সেখানেই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। নির্যাতনের পর কোনওমতে বাড়ি ফিরে যান ওই তরুণী। এরপরেই হরিদেবপুর থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই চন্দন এবং দেবাংশু পলাতক ছিল। এর মধ্যেই চন্দন ধরা পড়লেও দেবাংশুকে ধরা ছিল পুলিশের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ! পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পরই প্রথমে দিল্লি এবং পরে উত্তরপ্রদেশে গা ঢাকা দিয়েছিল দেবাংশু।
সেখানে বিভিন্ন ধর্মশালায় রাত কাটাত সে। খুব কম টাকায় দু-একদিনের জন্যেই এক একটি ধর্মশালাকে দেবাংশু বেছে নিত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। খাওয়াদাওয়াতেও বিশেষ খরচ করত না। কিন্তু একটা সময় টান পড়ে পকেটে। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এরপরেই এক ব্যক্তির ফোন থেকে আত্মীয়ের মাধ্যমে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেবাংশু। জানায়, তার টাকার দরকার। এরপরই বৃহস্পতিবার ট্রেনে উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় ফেরে দেবাংশু।
কলকাতায় ফিরেই ওই আত্মীয়ের মাধ্যমে ফের একবার মায়ের সঙ্গে যোগযোগ করে অভিযুক্ত। গভীর রাতে দেশপ্রিয় পার্কে টাকা নিয়ে আসতে বলে সে। ছেলের কথা ফেলতে পারেননি মা। একেবারে গাড়ি ভাড়া করে রাতে ওই এলাকায় পৌঁছে যান মা। আগে থেকেই পরিবারের উপর নজর ছিল পুলিশের। সেই মতো তৈরি ছিলেন তদন্তকারীরাও। ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত সেখানে পৌঁছতেই একেবারে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।