• চালু হতে গিয়েও কেন দিঘার সমুদ্রে অনুমতি দেওয়া হয়নি  স্কুবা ডাইভিং-এর? জুবিন গর্গের মৃত্যুর পর সামনে এল আসল ঘটনা...
    আজকাল | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: অসমিয়া গানের যুবরাজ হিসেবে পরিচিত গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুতে সঙ্গীত দুনিয়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জানা গিয়েছে, তিনি স্কুবা ডাইভিং করার সময় প্রাণ হারান। এই ঘটনার পর ফের নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—দিঘার সমুদ্র কি স্কুবা ডাইভিং-এর জন্য আদৌ নিরাপদ?

    প্রায় আট বছর আগে দিঘার সমুদ্রে স্কুবা ডাইভিং চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছিল বেশ কিছু সংস্থা। তবে সেই সময় প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। কারণ হিসাবে জানানো হয়েছিল, দিঘার সমুদ্র এই ধরনের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য অনুকূল নয়। ফলে যদি কোনো ঘটনা ঘটে তবে সেটা কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। এই সিদ্ধান্তে কিছু লোক অসন্তুষ্ট হলেও বড় অংশের সমর্থন এসেছিল প্রশাসনের দিকেই। তবে দিঘায় পর্যটকদের জন্য আরেক অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস প্যারাগ্লাইডিং চালু আছে। 

    এবিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক তথা দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, 'দিঘায় সমুদ্রের ঢেউ উচ্চ এবং ঘন ঘন। যা স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য প্রতিকূল। তাছাড়া স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য প্রয়োজন পরিষ্কার জল, যেমনটা গোয়া বা আন্দামানে দেখা যায়। কিন্তু দিঘার সমুদ্রের জল এতটা স্বচ্ছ নয়। ফলে এখানে স্কুবা ডাইভিং চালুর কোনো অনুমতি সরকারের তরফে দেওয়া হয় না। অদূর  ভবিষ্যতেও দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।' 

    তবে প্যারাগ্লাইডিংয়ের মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস দিঘায় চালু থাকলেও সেটা কিন্তু করা হয় সমুদ্রের গতিপ্রকৃতি বুঝে। এই সম্পর্কে হোটেল মালিকদের পক্ষ থেকে বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, 'দিঘায় প্যারাগ্লাইডিং, স্পিডবোট চালানো হয়। তবে সবক্ষেত্রে সমুদ্রের গতিবিধি ও পরিবেশ বুঝে চালানোর নির্দেশ দেওয়া আছে। এর পরেও দুর্ঘটনা ঘটে এবং সেই দুর্ঘটনায় বহু পর্যটক আহতও হয়েছেন। তাই সম্প্রতি প্রশাসন আরও কিছু কড়া বিধি নিষেধ জারি করেছে।' 

    প্রসঙ্গত, জুবিন গর্গ ছিলেন এমন একজন সঙ্গীতশিল্পী যিনি অসম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের লোকসঙ্গীতকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। শুক্রবার তাঁর অকালপ্রয়াণে ভক্তদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের সাংস্কৃতিক আইকন হিসেবে খ্যাত জুবিন কয়েকদিন আগেই সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন নর্থ ইস্ট ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে। কিন্তু উৎসব শুরুর আগেই ঘটে গেল অঘটন। জানা গিয়েছে, হঠাৎই সমুদ্রে পড়ে যান শিল্পী। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকেরা শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। শুধু অসম নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গীত, সংস্কৃতি আর চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। বাংলা, হিন্দি থেকে শুরু করে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অসংখ্য অমর সঙ্গীত উপহার দিয়েছেন তিনি। তাঁর অকাল প্রয়াণে ভক্তমহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

    সঙ্গীতপ্রেমী, সহকর্মী শিল্পী থেকে শুরু করে অগণিত অনুরাগী— জুবিন গর্গের এই হঠাৎ-মৃত্যু স্তম্ভিত করে দিয়েছে সবাইকে। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে আসামি এবং ভারতীয় সঙ্গীতের মঞ্চে তিনি ছিলেন এক অনন্য কণ্ঠস্বর। জুবিনকে বলা হত ‘উত্তর-পূর্বের রকস্টার’! 
  • Link to this news (আজকাল)