• প্রতিবন্ধী নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন, তিন মাস পরেও বিচার না পাওয়ায় আদালতে বিক্ষোভ মৃতার পরিবারের...
    আজকাল | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • মিল্টন সেন: প্রায় চার মাস আগে কোন্নগরে এক প্রতিবন্ধী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। গত ২৭ মে কোন্নগর কানাইপুর কলোনি এলাকার বাসিন্দা এক নাবালকিকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটে। এরপর সেই মৃতদেহ একটি কলা বাগানে ফেলে দেওয়ায় হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রতিবেশী এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত যুবক ঘটনার কথা স্বীকারও করে। গোটা ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতি।

    শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় নিজে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে জানান, অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে মামলা লড়বেন তিনি। শ্রীরামপুর আদালতে মৃতের পরিবারের হয়ে মামলা লড়েন তিনি। কিন্তু চার মাস পরও কোনও নিষ্পত্তি না হওয়ায় শ্রীরামপুর আদালতে বিক্ষোভ দেখালেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের দাবি, তাদের হয়ে কোন আইনজীবী মামলা লড়ছেন সেটাও তাদের জানা নেই। তাদের দাবি, চার মাস হয়ে গেলো এখনও কোনও বিচার হয়নি। এই বিষয়ে অন্য পক্ষের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানান, এই ধরনের মামলায় তিন মাসে কখনও বিচার পাওয়া যায় না। মোট ৪২ জন সাক্ষী আছে, সময় লাগবে। তবে এই মামলার নিষ্পত্তি ঘিরে ধোঁয়াশায় রয়েছে মৃতার পরিবার।

    উল্লেখ্য, গত ২৭ মে বিকেলে বছর তেরোর ওই নাবালিকাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় বাসাই কলোনির অসীম। তার দুদিন পর বাড়ি থেকে দু'কিলোমিটার দূরে ন পাড়া এলাকায় নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জানা যায়, বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে বিশেষভাবে সক্ষম নাবালিকাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। সেই ঘটনা অভিযুক্তকে নিয়ে পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। ঘটনার পর গত ২ জুন অভিযুক্তকে শ্রীরামপুর পকসো আদালতে পেশ করে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। জানা যায়, নাবালিকার বাড়ি থেকে সাইকেলে করে অভিযুক্ত যুবক নাবালিকাকে কানাইপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দিয়ে নপাড়ায় যায়। পথে একটি বিস্কুটের দোকান থেকে বিস্কুট কিনে ওই নাবালিকাকে দেয়। তারপর বাঁশ বাগানের ভিতর নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করে ফেলে রেখে চলে যায়।

    এরপর পুলিশ স্নিফার ডগ নিয়ে এসে তল্লাশি চালায় এলাকায়। মৃতদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টা পরে ডানকুনির খরিয়াল থেকে অসীম মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। নাবালিকার পরিবার, এলাকাবাসী সকলেই অভিযুক্তর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। নাবালিকার পক্ষে শ্রীরামপুর আদালতে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার পরপরই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে যান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, জেলা সিপিআইএম নেতৃত্ব।

    জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার ও নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। পরে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ অসীম মজুমদারকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। কীভাবে সে নাবালিকাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিল সাইকেলে চাপিয়ে, তারপর কোন দোকান থেকে বিস্কুট কিনেছিল, তারপর যেখানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করে, এই সমস্ত জায়গায় পুলিশকে দেখিয়ে দেয় অভিযুক্ত। মৃত নাবালিকার দেহের ময়নাতদন্ত হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ১২ জুন শ্রীরামপুর পকসো আদালতে পেশ করা হয় অভিযুক্তকে।
  • Link to this news (আজকাল)