অনেকটাই কেটে গিয়েছে জট, শীঘ্রই জুড়বে নিউ গড়িয়া-সেক্টর ফাইভ, পুজো মিটলেই শুরু চিংড়িঘাটা মেট্রোর কাজ...
আজকাল | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজো মিটলেই শুরু হয়ে যাবে চিংড়িঘাটা মেট্রোর কাজ। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হচ্ছে তা মেট্রোর তরফে জানানো হয়নি। কলকাতা মেট্রোর জনসংযোগ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, চিংড়িঘাটা মেট্রোর কাজ বর্তমানে বিচারাধীন বিষয়। ফলে, মেট্রো কর্তৃপক্ষের হাতে ব্যাপারটা নেই। তবে, চিংড়িঘাটা নিয়ে যে জট ছিল তা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। এখন শুধু পুজো শেষের অপেক্ষা। পুজো মিটলেই পুলিশের তরফে যেদিন অনুমতি দেওয়া হবে তৎক্ষণাৎ কাজ শুরু করে দেবে মেট্রো। গোটা কাজটাই ট্রাফিক ব্লক করে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে, পুলিশের অনুমতি মিললেই শুরু হয়ে যাবে কাজ। চিংড়িঘাটা মেট্রোর জট কেটে কাজ মিটে গেলে সেক্টর ফাইভের সঙ্গে কবি সুভাষ জুড়ে যেতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। বর্তমানে, কবি সুভাষ থেকে মেট্রো বেলেঘাটা পর্যন্ত আসে।
চিংড়িঘাটার কাজ মিটে গেলে তা সেক্টর ফাইভ হয়ে বিশ্ব বাংলা পর্যন্ত চালু হয়ে যেতে পারবে অনায়াসে। অন্যদিকে, মহালয়ার দিন বিশেষ মেট্রো পরিষেবা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, আগামী রবিবার ব্লু লাইনে মোট ১৮২টি মেট্রো (৯১ আপ ও ৯১ ডাউন) চলবে। সাধারণত রবিবারে যেখানে ১৩০টি মেট্রো চলে, সেখানে মহালয়া উপলক্ষ্যে বিশেষ পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭৩টি মেট্রো দক্ষিণেশ্বর শাখায় চলবে। বাকিগুলি দমদম এবং নোয়াপাড়া লাইন পর্যন্ত চলাচল করবে। প্রথম মেট্রো পরিষেবা সেদিন পাওয়া যাবে নোয়াপাড়া থেকে সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে, দক্ষিণেশ্বর থেকে সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে এবং দমদম থেকে সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে ডাউন লাইনে।
অন্যদিকে, মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে এবং শহীদ খুদিরাম থেকে সকাল ৬টা ৫৪ মিনিটে আপ লাইনে প্রথম মেট্রো পরিষেবা দেওয়া হবে। তবে সেদিন শেষ মেট্রো চলাচলের সময়সূচি অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। চিংড়িঘাটায় কলকাতা মেট্রোর অরেঞ্জ লাইনের (সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে নিউ গড়িয়া) কাজ সম্পূর্ণ করা এবং এই সংক্রান্ত জটিলতা কাটাতে মঙ্গলবার সব পক্ষকে বৈঠকে বসার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। বৈঠক হয় পার্কস্ট্রিটের মেট্রো ভবনে। এদিন দুপুর ২টো ৩০ মিনিটে বৈঠক আয়োজন করা হয়। বৈঠকে ছিল রাজ্য সরকার, পুলিশ, কলকাতা নগরোন্নয়ন পর্ষদ (কেএমডিএ), মেট্রো রেল এবং নির্মাণকারী সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)-এর প্রতিনিধিরা।
আদালত আগেই জানিয়েছিল, জনগণের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে সদর্থক বৈঠক করতে হবে। চিংড়িঘাটা মোড়ের কাছে মাত্র ৩৬৬ মিটার অংশে মেট্রোর নির্মাণকাজ বাকি আছে। আরভিএনএল জানিয়েছে, মাত্র তিনটি স্তম্ভের কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। তার জন্য সপ্তাহান্তে তিন দিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অন্তত ১২ ঘণ্টা করে কাজ করার সময় দিতে হবে। ওই সময়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রাজ্য এখনও এই কাজের অনুমতি দেয়নি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। তখনই আদালত সব পক্ষকে বৈঠকে বসার পরামর্শ দিয়েছিল। এরপরই জানিয়ে দেওয়া হয় বৈঠকের স্থান এবং দিনক্ষণ।
চিংড়িঘাটা মোড় শহরের ব্যস্ততম রাস্তাগুলির মধ্যে একটি। সন্ধ্যায় প্রচুর গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, চিংড়িঘাটা মোড়ের কাছে গৌরকিশোর ঘোষ স্টেশন চালু হলে যানবাহনের চাপ আরও বা়ড়বে। তা সামলাতে আন্ডারপাসের প্রয়োজন। মেট্রো কর্তৃপক্ষকেই তা তৈরি করে দিতে হবে। আন্ডারপাস তৈরি না করা পর্যন্ত মেট্রো লাইনের কাজে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না রাজ্যের তরফে। এই সংক্রান্ত জটিলতা কাটাতেই মঙ্গলবার বৈঠক হয়। আগে আন্ডারপাস তৈরির কাজ হবে কি না, মেট্রোর কাজের জন্য চিংড়িঘাটার রাস্তায় দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হলে বিকল্প কোন পথের ব্যবস্থা করা হবে, সেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মঙ্গলবারের বৈঠকে নেওয়া হয়। এই বৈঠকের উপরেই চিংড়িঘাটা মেট্রোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে ছিল। তবে বৈঠক শেষে সকলের মুখেই ছিল চওড়া হাসি।