• হারিয়ে যাওয়া ‘লাল চাল’ ফিরিয়ে আনতে তৎপর কুপওয়ারার মহিলারা
    বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর: জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত লাগোয়া কুপওয়ারার তিতওয়াল। ছবির মতো সুন্দর এই পাহাড়ি এলাকা মাঝেমধ্যেই কেঁপে ওঠে পাকিস্তানি সেনা বোমাবর্ষণে। তবে বারুদের গন্ধ স্থানীয় মা-বোনেদের ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। সকাল হলেই দল বেঁধে বেরিয়ে পড়ছেন তাঁরা। গন্তব্য খেত। সেখানেই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ‘লাল চাল’কে ফিরিয়ে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। স্থানীয়রা বলছেন, এই চাল একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা হারিয়ে যায়। সেই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে তুলতেই জোট বেঁধেছেন মহিলারা।

    গত বছর থেকেই শুরু হয়েছে বিশেষ এই ধানের চাষ। আপাতত সব ঠিকঠাকই চলছে। এবছর প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি উৎপাদনও হয়েছে। এই পরিসংখ্যান স্থানীয়দের আরও উজ্জীবিত করেছে। চামকোটার এক মহিলা উদ্যোগপতি জাহিদা বানো জানিয়েছেন, ‘লাল চাল বা  রেড রাইস আমাদের পরম্পরার সঙ্গে যুক্ত। এই মরশুমে ভালো ফসল হবে বলে আমরা আশাবাদী। মাঝে চাষ একেবারে বন্ধ হয়েছিল। ফের উৎপাদন শুরু করা খুব একটা সহজ ছিল না। কিন্তু, সাফল্য এসেছে। বার্ষিক প্রায় দুই কুইন্টাল লাল চাল উৎপাদন হচ্ছে।’ জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর রুরাল লাইভলিহুড মিশন (জেকেআরএলএম)-এর অধীনে উমিদ প্রকল্পে একত্র হয়েছেন জাহিদার মতো আরও ২০ জন মহিলা উদ্যোগপতি। তাঁরাই যৌথভাবে বীজ জোগাড়, চাষ থেকে শুরু করে মার্কেটিংয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তাঁদের দেখে কুপওয়ারার অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছেন। তাঁরাও এগিয়ে আসছেন। মুনিরা নামে আরও এক উদ্যোগপতির বক্তব্য, আমাদের লক্ষ্য স্থানীয় এই চালকে আন্তর্জাতিক পরিসরে নিয়ে যাওয়া। রেড রাইস বা লাল চালকে স্থানীয় ভাষায় ‘জাগ ভাত’ বা ‘জাগ তামুল’ বলা হয়। মূলত পাহাড়ি এলাকায় চাষ হওয়া এই শষ্যের বিশেষ পুষ্টিগুণ রয়েছে। তিতওয়ালের জেকেআরএলএম’এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার পদে রয়েছেন রয়েছেন আর্শাদ আহমেদ ভাট। তাঁর মতে, মহিলারা শুধুই হারিয়ে যাওয়া শস্যকে ফিরিয়ে আনছেন না, তাঁদের আত্মবিশ্বাস, একতা ও আর্থিক স্বাধীনতাও নয়া মাত্রা পাচ্ছে। চালের প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিংয়েও সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে।     
  • Link to this news (বর্তমান)