দিল্লির ভয়াবহ দূষণ নিয়ন্ত্রণই চ্যালেঞ্জ, শীতের আগেই তৎপরতা শুরু রেখা গুপ্তা সরকারের
বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বর্ষায় জল-যন্ত্রণা মোকাবিলায় ডাহা ফেল করেছে দিল্লির বিজেপি সরকার। আসন্ন শীতের মরশুমে দেশের রাজধানী শহরে মাত্রাছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণে কি ‘পাস মার্ক’ মিলবে? আপাতত এহেন গুরুতর প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দিল্লি সচিবালয়ের অন্দরে। প্রসঙ্গত, দিল্লিতে ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি সরকারকে এই প্রথমবার ‘শীত’ এবং ‘শীতের দূষণ’ সামলাতে হবে। সেই কারণে অন্তত মাসখানেক আগে থেকেই এই ব্যাপারে তৎপরতা বাড়াতে চাইছে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার নেতৃত্বাধীন দিল্লির বিজেপি সরকার।
সরকারি সূত্রে খবর, এনিয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দিল্লি সরকারের মন্ত্রীরা। সেইমতো শহরজুড়ে দু’শোরও বেশি জল ছেটানোর যন্ত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দিল্লির বিভিন্ন বহুতলে দেড়শোরও বেশি অ্যান্টি-স্মগ ডিভাইস বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই বছর পিইউসি (পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল) সার্টিফিকেট না থাকা গাড়িকে জরিমানা করার উপর আরও জোর দেবে বিজেপি সরকার। সেইমতো নির্দেশ দেওয়া হবে দিল্লির ট্র্যাফিক পুলিশকে। তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দীপাবলিতে আতসবাজির মোকাবিলা করাই অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। তা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেই দূষণ মোকাবিলা তুলনায় অনেকটা সহজ হবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
প্রতি বছর প্রধানত দীপাবলির পর থেকেই লাগামছাড়া দূষণে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় দিল্লি তথা সংলগ্ন এনসিআরের (ন্যাশনাল ক্যাপিটল রিজিওন) বাসিন্দাদের। পুরু ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকে যায় দিল্লি-এনসিআর। সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় শিশু ও প্রবীণদের। প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্যও একাধিক বিধিনিষেধ জারি হয়। তীব্র শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে রোগীদের। এ বছর যাতে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়, সেইমতো পরিকল্পনা করছে দিল্লির বিজেপি সরকার। যদিও তাতে কাজের কাজ কতটা হবে, তা নিয়ে দিল্লির বাসিন্দাদের একটি বড় অংশই সন্দিহান। কারণ দিল্লি-এনসিআরের দূষণের আরও একটি কারণ হরিয়ানা, রাজস্থান, পাঞ্জাবের মতো পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে শস্যের আগাছা পোড়ানো। এই ব্যাপারে প্রশাসনিক রক্তচক্ষু থাকলেও তা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে এখনও পারেনি সরকার। সরকারি সূত্রে খবর, শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই ইস্যুতে কথা বলা হবে। তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে দিল্লিবাসী।