বিষ্ণুপুর ও পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্প দেখা যাবে ভুজিয়াপানি সর্বজনীনে
বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শ্যামল পাল, বাগডোগরা: বাংলার প্রাচীন টেরাকোটা শিল্প ফুটে উঠবে বাগডোগরার ভুজিয়াপানি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির মণ্ডপে। এ বছর এদের ৩৫তম বর্ষের পুজো। থিমের নাম রাখা হয়েছে— মর্তে এল মা যে টেরাকোটার সাজে। কাল, রবিবার মহালয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ভার্চুয়ালি এই পুজোর উদ্বোধন হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে মণ্ডপ তৈরির কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছে। মূলত বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর ও পাঁচমুড়া গ্রাম এই শিল্পের জন্য বিখ্যাত। বাংলায় পাথরের অভাব পূরণ করতে ইটের ব্যবহার ছিল একসময়, যা পোড়ামাটির এই শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন বংশের আমলে এই শিল্পের ব্যবহার দেখা যায়। যা বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে। প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতাতেও এর নিদর্শন রয়েছে। বাংলার সেই প্রাচীন টেরাকোটা শিল্পকে এবার পুজো মণ্ডপে তুলে ধরতে এই থিম বেছে নিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। খলপা বেড়া, মাটির প্রদীপ, শাখা, পলা, কুলো, মাটির ঘোড়া ইত্যাদি পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে পুজো মণ্ডপ। বাগডোগরার ভুজিয়াপানি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি গত কয়েক বছর ধরে দর্শনার্থীদের চমক দিয়ে আসছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে একাধিক পুরস্কার জয় করেছে তারা। এ বছরও তাদের এই থিম দর্শনার্থীদের মনজয় করবে বলে আশাবাদী পুজো কমিটির সদস্যরা। পুজো মণ্ডপে টেরাকোটার পাশাপাশি থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা ও আলোকসজ্জাতেও থাকছে চমক। গ্রামীণ এলাকার এই বিগ বাজেটের পুজো ঘিরে বেশ উৎসাহ ও উদ্দীপনা থাকে এলাকাবাসীর। নাচ-গান, ধুনুচি নাচ ও হইহুল্লড় করে পুজোর দিনগুলি কাটান গ্রামবাসীরা। পুজো কমিটির সম্পাদক উৎপল সেন বলেন, প্রত্যেক বছর আমাদের এই পুজো ঘিরে বেশ উৎসাহ থাকে দর্শকদের। এশিয়ান হাইওয়ে থেকে পুজো মণ্ডপ পর্যন্ত আলোকসজ্জা ও গোটা রাস্তায় পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের ভলান্টিয়াররা থাকেন। এ বছর আমাদের থিম দর্শকদের মনজয় করবে বলে আশাবাদী আমরা। আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে আমাদের পুজোর ভার্চুয়ালি উদ্বোধন হতে চলেছে। নিজস্ব চিত্র