• সিউড়ির প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাংলায় লেখা সাইনবোর্ড বাধ্যতামূলক
    বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: এবার থেকে সিউড়ির প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেই বাংলায় লেখা সাইনবোর্ড লাগানো বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। পুজো মিটতেই সাঁইথিয়া পুরসভা কর্তৃপক্ষ এনিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে। ইতিমধ্যেই এনিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান বিপ্লব দত্ত সকল বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে একপ্রকার চূড়ান্ত আলোচনা সেরে নিয়েছেন। বৈঠকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে, দোকান সহ বেসরকারি ও সরকারি অফিসের ক্ষেত্রে একই নিয়ম কার্যকর করা হবে। মূলত বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দিতেই পুরসভা কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

    পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, বাংলা ভাষায় সাইনবোর্ড বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করা হবে। পুজোর পরেই এই সংক্রান্ত একটি চূড়ান্ত নির্দেশিকাও জারি করা হবে। ইতিমধ্যে এনিয়ে বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠকও হয়েছে। আগামীতে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব। 

    প্রসঙ্গত, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষের প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছেন। রবীন্দ্র কর্মতীর্থ লালমাটির জেলা বীরভূম থেকেই সেই আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। সেই জেলারই অন্যতম একটি পুরসভা এবার বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান জানিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল। পুরসভার তরফে জানা গিয়েছে, বোর্ড সদস্যদের উপস্থিততে ইতিমধ্যে একটি ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে। তবে, আগামীতে আরও একটি বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে। সেই বৈঠকে দোকান সহ বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি থাকার কথা রয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকের পরবর্তীতেই বাংলায় সাইনবোর্ড বাধ্যতামূলক ঘোষণা করে চেয়ারম্যান নির্দেশিকা জারি করবেন।

    পুরসভার তরফে জানা গিয়েছে, প্রতিটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডেই বাংলা ভাষাকে প্রাধান্য দিতে হবে। সাইনবোর্ডের একদম উপরে বড় হরফে বাংলায় লিখতে হবে। এটা একপ্রকার বাধ্যতামূলক করার প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে। তবে, ওই সাইনবোর্ডে বাংলার নীচে অন্য যে কোনও ভাষার ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে অবশ্য পুরসভা কর্তৃপক্ষের কোনও আপত্তি নেই বলেই জানা গিয়েছে। ব্যবসায়িকমহলের একটা বড় অংশ পুরসভা কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। 

    সিউড়ি মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নজরুল ইসলাম নিজেও পুরসভার এহেন উদ্যোগে সহমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এই উদ্যোগ অবশ্যই ভালো। অন্যদিকে, পুরসভার এহেন উদ্যোগে খুশি শিক্ষক পার্থসারথি ঘোষ। তিনি বলেন, মাতৃভাষা মাতৃ দুগ্ধসম। সেক্ষেত্রে পুরসভার এই সিদ্ধান্তে বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা আরও বাড়বে। এটি অবশ্যই সাধু উদ্যোগ।
  • Link to this news (বর্তমান)