সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: এক সদস্য তৃণমূলে যোগদান করায় গোটা পঞ্চায়েতটি বিজেপির হাতছাড়া হতে বসেছিল। সেই আক্রোশে তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন হাজরার বাড়িতে গভীর রাতে দলবল নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘরের জানালা ও অ্যাসবেসটসের ছাউনি যথেচ্ছভাবে ভাঙচুর করা হয়। এমনকী, খুন করার উদ্দেশ্যে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও তপনবাবুর চিৎকারে প্রতিবেশীরা চলে আসায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। সোনামুখীর মানিকবাজার গ্রামে ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। রাতেই তপনবাবু সোনামুখী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। প্রসঙ্গত, নয় সদস্য বিশিষ্ট মানিকবাজার গ্রামপঞ্চায়েতটি বিজেপির দখলে রয়েছে। বিজেপির পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শ্যামলী লোহার নামে এক সদস্য কয়েকদিন আগে সোনামুখীতে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন তপনবাবু। এরপরই বিজেপি ওই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর আশঙ্কা ভুগতে থাকে। তার কয়েকদিনের মধ্যেই বিজেপির বিধায়ক দিবাকর ঘরামির নেতৃত্বে শ্যামলীদেবী পুনরায় বিজেপিতে ফিরে আসেন। কিন্তু, তপনবাবু বিজেপির টার্গেট হয়ে যান বলে তৃণমূলের দাবি। তার জেরেই পঞ্চায়েত প্রধান ও স্থানীয় বিজেপির এক পঞ্চায়েত সদস্যের নেতৃত্বে তপনবাবুর বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
তপনবাবু বলেন, মানিকবাজার গ্রামপঞ্চায়েতের এক মহিলা সদস্য স্বেচ্ছায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন। তাতে পঞ্চায়েতটি বিজেপির হাতছাড়া হতে বসেছিল। পরে ওরা ওই সদস্যাকে চরম ভয় দেখিয়ে পুনরায় দলে ফিরিয়েছে। তারপর থেকেই আমাকে টার্গেট করা হয়েছে। আমার বাড়িতে রাতের অন্ধকারে দলবল এনে হামলা চালানো হয়েছে। পঞ্চায়েতের প্রধান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আমার বাড়ির বাইরে থেকে ক্রমাগত আমার নম্বরে ফোন করেছেন। প্রাণভয়ে আমি ফোন রিসিভ করিনি। আতঙ্কে আমার বয়স্ক বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনার পরই থানায় খবর দেওয়া হয়। অবশ্য তার আগে গ্রামবাসীরা চলে আসায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
মানিকবাজার গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান প্রদীপ মাল বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ। মানিকবাজার এলাকায় তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। কয়েকদিন আগেই দু’পক্ষের বিবাদ চরমে ওঠে। তার জেরেই হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্যা শ্যামলীদেবীকে তৃণমূল নেতারা ভয় দেখিয়ে ওদের দলের পতাকা ধরিয়েছিল। তিনি ভুল বুঝতে পেরে দলে ফিরে এসেছেন।