• পুজো বাজারের স্লগ ওভারেই উঁকি মণ্ডপে
    বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দুপুর আড়াইটে তখন। রোদ ঝলমলে গড়িয়াহাট। স্কুল ড্রেস পরা বাচ্চারা। পিছনে মায়েরা তাদের ব্যাগ কাঁধে কার্যত সন্তানদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়চ্ছেন। স্কুল থেকে পিক আপের পরই গড়িয়াহাট থেকে টুকটাক কেনাকাটা করে নেবেন। কিন্তু বাচ্চাদের এক পা সিংহি পার্কের দিকে যেতে চাইছে, তো অন্য পা একডালিয়া। একবার প্যান্ডেলের ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে মা দুর্গাকে দেখে নিলে তবে শান্তি তাদের। মায়েদের বক্তব্য, ‘প্রতিদিনই তো দেখছিস। আজও!’ বাচ্চাদের উত্তর, ‘আজকে তো গয়না পরিয়েছে। চলো না দেখে আসি।’

    সিংহি পার্কে দুর্গা ঠাকুর ত্রিপল দিয়ে ঢাকা। তবে পাশ দিয়ে তাঁকে দিব্যি দেখা যাচ্ছে। সেখানেই ভিড় স্কুল পড়ুয়াদের। পাশ দিয়ে স্কুল গাড়ি যাচ্ছে। গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ঠাকুর দেখে নিচ্ছে তারা। আর বেলা বাড়তেই গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট, হাতিবাগান চত্বরে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। সঙ্গে শিশুদের বায়না। দেবীপক্ষ শুরু হতে হাতে মাত্র কিছু সময়। তাই এখন চলছে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনা। 

    বেছে বেছে একটা ভালো পারফিউম। জামার সঙ্গে মানানসই জাঙ্ক জুয়েলারি। ঠাকুর দেখতে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি হল জুতো। ভালো দোকান থেকে স্টাইল ও আরাম দু’টোই যেন থাকে, এমন জুতো কিনতে হবে। তারই আপ্রাণ চেষ্টা চলছে এখন। ফলে সর্বত্র অসম্ভব ভিড়। শুক্রবার দুপুরে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। প্রবল বৃষ্টি। তবে তারপরই কাঠফাটা রোদ। ফলে ঘেমে নেয়ে একেবারে যা তা অবস্থা। খদ্দের ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত ব্যবসায়ীরা। মেজাজ খাপ্পা। বলেই বসলেন, ‘এ তো চৈত্রের মতো গরম। 

    এখন চৈত্র সেল শুরু করে দেব নাকি?’ তবে সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের প্রতিবাদ, ‘রোদ থাক। বৃষ্টির চেয়ে রোদ অনেক ভালো। ঘেমে যাচ্ছি ঠিকই। তাও কেনাকাটা তো করতে পারছি।’ 

    এখন পুজোর বাজার তুঙ্গে। চলছে শেষ মুহূর্তের ল্যাপ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘এখন বেশিরভাগ মানুষ জামার সাইজ বদলাতে আসছেন। সকলকে বলে দেওয়া হয়েছে, শনি আর রবিবার এক্সচেঞ্জ হবে না। ওই দিনগুলো ভিড় থাকে। তাই আজকে অনেকেই কেনা জামাকাপড় বদলাতে এসেছিলেন।’ ‘এ বছর মোটের উপর ভালোই ব্যবসা হল,’ জানালেন কলকাতার দোকানদাররা। আজ, শনিবার পুজোর বাজারের স্লগ ওভার শুরু হচ্ছে। আর মাত্র দিন তিনেক বাজার চলবে। তারপর থেকেই ঠাকুর দেখার মোডে চলে যাবে বাঙালি। তাই এই সপ্তাহান্ত বৃষ্টিহীন ঝলমলে থাকলেই সোনায় সোহাগা, এমনই মনে করছেন ক্রেতারা, ব্যবসায়ীরাও।
  • Link to this news (বর্তমান)