• আজ থেকে আদিবাসী কুড়মি সমাজের রেল, সড়ক অবরোধ
    বর্তমান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও পুরুলিয়া: উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পুজোর প্রাক্কালে আজ, শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘রেল টেকা’ (রেল অবরোধ) ও ডহর ছেঁকার (পথ অবরোধ) ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়ুম সমাজ। জাতিসত্ত্বার দাবিকে সামনে রেখে এ রাজ্যের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় এই অবরোধ হবে বলে জানিয়েছে কুড়মিরা। মোট প্রায় ১০০টি পয়েন্টে অবরোধ হওয়ার কথা রয়েছে। পুরুলিয়ার সমস্ত স্টেশনেই অবরোধ করবে বলে আগেই জানিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতৃত্বরা। সেই অবরোধ আটকানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ, প্রশাসনের কাছে। একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, এই অবরোধ সম্পূর্ণভাবে বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। অবরোধ আটকাতে রেল ও রাজ্য পুলিশকে যথাযত পদক্ষেপ করতে হবে। আদালতের নির্দেশ পালনে বদ্ধপরিকর প্রশাসন।

    শুক্রবার ভবানী ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম বলেন, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে আদিবাসী কুড়মি সমাজের ব্যানারে রেল ও পথ অবরোধ হয়েছিল। বিপর্যস্ত হয়েছিল জনজীবন আর ব্যবসা-বাণিজ্য। ২০২৪’এ কিছু হয়নি। এবার ২০২৫’এ সমাজমাধ্যম আর সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, ফের রেল ও পথ অবরোধ করা হবে। এডিজি বলেন, রেল ও পথ অবরোধ করা যাবে না, স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের। সেই নির্দেশ অমান্য করে জনজীবন বিপর্যস্ত করার চেষ্টা হলে, পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। জঙ্গলমহলের চারটি জেলায় পুলিশকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। আরপিএফকেও ফোর্স বাড়াতে বলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, পুরুলিয়া থেকেই যেহেতু রেল ও পথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে, তাই সেখানে আরপিএফ এবং পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।    

    জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুলিশের কাজে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। অবরোধ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই সবরকম প্রস্তুতি সেরে রেখেছে পুলিশ। যেসব পয়েন্টে অবরোধ হওয়ার কথা রয়েছে, সেখানে সকাল থেকেই প্রচুর পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকার কথা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে বেরিয়ে মানুষজন কোনও বিপদে যাতে না পড়ে, সেদিকে কড়া নজর থাকবে পুলিশের। পাশাপাশি, এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গত কয়েকদিন ধরেই গ্রামে গ্রামে রুটমার্চ করছে পুলিশ। পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেও পুলিশ কড়া নজর রাখছে। বাইরের রাজ্য থেকে কেউ ঢুকে যাতে অশান্তি না পাকায়, তাই নাকা চেকিং করা হচ্ছে।

    এদিকে, বৃহস্পতিবার আদালতের রায়ের পর থেকেই আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতর ফোন বন্ধ। তবে, শুক্রবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেখানে জানিয়েছেন, জাতিসত্ত্বার দাবিতে আমরা দীর্ঘ বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। প্রশাসন কেবল আশ্বাসই দিয়েছে। আমাদের দাবি মানেনি। তাই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অবরোধ হচ্ছেই। 
  • Link to this news (বর্তমান)