• থানায় ঢুকিয়ে ব্যক্তিকে খাওয়ানো হল মূত্র, ধোয়ানো হল জুতোর ফিতে, পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া...
    আজকাল | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের টেহরিতে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে কুরান গ্রামের বাসিন্দা কেশব থালওয়াল দাবি করেছেন, চলতি বছরের ৯ মে চম্বা থেকে মুসৌরি রোডে যাওয়ার পথে দু’জন ব্যক্তি জোর করে তাঁকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে কদ্দু খাল হয়ে কোটি কলোনি পুলিশ আউটপোস্টে নিয়ে গিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। কেশবের অভিযোগ, থানার ওসি ধর্মেন্দ্র রৌন্টেলা এবং অন্যান্য পুলিশকর্মীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। জামাকাপড় খুলতে বাধ্য করে অত্যাচার চালানো হয় থানার ভিতরেই। প্রস্রাব খাওয়ানো, জুতোর ফিতে ধোয়ার মতো অমানবিক আচরণ করেন পুলিশকর্মীরা।

    এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়। তবে টেহরি গাড়ওয়ালের এসএসপি আয়ুষ আগরওয়াল কেশবের সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, কেশব আগেও নিজের বোনের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ করেছিলেন, যা তদন্তে মিথ্যে প্রমাণিত হয়। এসএসপি আরও জানান, কেশবের মা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, কেশব নাকি তাঁর মা ও বোনকে মারধর করেছিলেন এবং গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লাগিয়ে তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মারধর, খুনের হুমকি, পুলিশের উপর হামলা এবং আর্মস অ্যাক্টসহ একাধিক গুরুতর মামলা ইতিমধ্যেই দায়ের রয়েছে। 

    অন্যদিকে, লাম্বগাঁও থানার ওসি ধর্মেন্দ্র রৌন্টেলা কেশবের অভিযোগকে ‘পুরোটাই মনগড়া ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, ঘটনাটির তদন্ত এক জন গেজেটেড অফিসারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে করা হচ্ছে এবং কোনও ভুয়ো তথ্য ছড়ালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, কেশবের অভিযোগ ঘিরে রাজনীতিও সরগরম। কংগ্রেসের প্রতাপনগরের বিধায়ক বিক্রম সিং নেগি এসএসপিকে চিঠি দিয়ে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি রাকেশ রানা কড়া পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় গ্রামবাসীরাও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলে এসএসপি-কে স্মারকলিপি দিয়েছেন। অপর দিকে উত্তরাখণ্ড ক্রান্তি দল পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে সতর্ক করেছে, তাদের দাবি না মানলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।

    বিতর্ক আরও বাড়তে থাকায় গাড়ওয়াল রেঞ্জের আইজি রাজীব স্বরূপ মামলাটি টেহরির বাইরে অন্য জেলার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত দুই সাব-ইন্সপেক্টরকে অবিলম্বে বদলির নির্দেশ দেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন তিনি। এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় জনরোষ তীব্র আকার নিয়েছে। অনেকে কেশবের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাল্টা জবাবে জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তারা নিরপেক্ষ তদন্তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যাঁরা প্রমাণ উপস্থাপন করতে চান, তাঁরা সরাসরি পুলিশের কাছে জমা দিতে পারেন।
  • Link to this news (আজকাল)