নতুন রেক কেনার দরপত্র বাতিল হওয়ার কারণে পরিষেবা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোয়। প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক প্রযুক্তির আট কোচের ১০টি রেক কেনার দরপত্র আহ্বান করার পরেও আচমকা তা বাতিল করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ফলে, আগামী বছরের মধ্যে এই মেট্রো সল্টলেক পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলেও রেকের অভাবে পরিষেবা ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুজোর পরে নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সপ্তাহে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথে চিংড়িঘাটার অসম্পূর্ণ অংশ জুড়ে যাওয়ার কথা। প্রায় ৩৬৬ মিটার ওই অংশ জুড়ে গেলে এই মেট্রোপথ সল্টলেক আইটি সেন্টার স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে বছরখানেকের মধ্যেই।
সে ক্ষেত্রে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো বেলেঘাটা থেকে সম্প্রসারিত হয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সেক্টর ফাইভ লাগোয়া আইটি সেন্টার স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। তেমন হলে দৈনিক যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। উল্লেখ্য, জোকা-মাঝেরহাট এবং নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর, দু’টি মেট্রোর ক্ষেত্রেই রেডিয়ো সঙ্কেত নির্ভর ব্যবস্থায় ট্রেন চালানোর কথা।
এই দুই মেট্রোপথের জন্য চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আইসিএফ) থেকে ৩৭টি রেক আসার কথা ছিল। কিন্তু, মাত্র দু’টি রেক এখনও পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে বাইরের সংস্থা থেকে ১০টি আধুনিক প্রযুক্তির রেক কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এই রেকগুলিতে রয়েছে একাধিক বৈশিষ্ট্য। যেমন, মেট্রোর দরজা বন্ধ হওয়ার সময়ে সামান্যতম বাধা এলেও দরজা খুলে যাবে এবং ট্রেন নড়বে না। যাত্রীদের পোশাকের অংশ, ব্যাগ, হাতের আঙুল আটকে গেলেও বন্ধ হবে না দরজা। ট্রেন লাইনচ্যুত হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি তা ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে জানিয়ে দেবে। থার্ড রেলে ট্রেনের বিদ্যুৎ টানার জন্য নির্দিষ্ট পাতের সঙ্গে পাথর বা কোনও অবাঞ্ছিত বস্তুর ধাক্কা লাগলেও ট্রেন থেমে যাবে।
এরই সঙ্গে, যাত্রী-নিরাপত্তার কথা ভেবে নতুন ট্রেনের সামনে এবং পিছনে সিসি ক্যামেরা থাকার কথা বলা হয়েছিল। তা ছাড়া কামরায় সিসি ক্যামেরা, ট্রেনের বাইরে ও ভিতরে মাইক্রোফোন, কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবা হয়েছিল নতুন রেকে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় অরেঞ্জ লাইন (নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর) এবং পার্পল লাইনে (জোকা-মাঝেরহাট) রেকের অভাবে পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মেট্রোকর্তাদেরই একাংশ। কারণ, এই দুই পথে রেডিয়ো সঙ্কেত নির্ভর ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার রেক নেই বললেই চলে। মাত্র দু’টি রেককে ওই ব্যবস্থার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ আগামী দিনে চিন এবং চেন্নাইয়ের আইসিএফ থেকে রেক পাওয়ার বিষয়ে আশা রাখছেন।