রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আলাদা ভাবে সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করেছে। জোটের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত তো হয়ইনি, বরং, প্রদেশ কংগ্রেস রাজ্যের সব বিধানসভা আসনে লড়াইয়ের লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। এই পরিস্থিতিতে আদিবাসী ও স্থানীয় মানুষের মতামত ছাড়া বীরভূমের ডেউচা-পাচামি খনি প্রকল্প চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে একজোট হলেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা। কয়লা ও ব্যাসল্ট খনন বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সিউড়িতে গণ-কনভেনশনের আয়োজন হয়েছিল। যার যৌথ আহ্বায়ক ছিলেন সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ ও কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ বসু। সেই কনভেনশনেই উপস্থিত হয়ে আদিবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থে এবং রাজ্য সরকারের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালানোর ডাক দিলেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী ও সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম। প্রাকৃতিক সম্পদ ও আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার সংগ্রামের পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবেও ওই উদ্যোগকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
দুর্নীতি ও খনির বরাতের হাত বদলের অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে কনভেনশন থেকে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে মাঝে রেখে ডেউচা-পাচামির খনি প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে আগেই তথ্য পেশ করে অভিযোগ করেছিল সিপিএম। কনভেনশনেও এ দিন প্রসেনজিতেরা ব্যাখ্যা করেছেন, ওই প্রকল্প শুধু বেআইনি নয়, স্থানীয় মানুষের জীবন, জীবিকা ও প্রকৃতি-পরিবেশের উপরে সরাসরি আঘাত হানছে। কয়েক হাজার আদিবাসী, দলিত ও সংখ্যালঘু পরিবার উচ্ছেদের ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, খনিজ দূষণের ফলে বাতাস ও জল দূষিত হতে শুরু করেছে। দীর্ঘমেয়াদে জলের মারাত্মক সঙ্কট দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাম ও কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, প্রকল্পের ফলে কিছু সংস্থা ও শাসক দলের মদত পুষ্ট চক্রের লাভ হবে। ক্ষতি হবে সাধারণ মানুষের। অধীর, রামচন্দ্রেরা এক সুরেই দাবি করেছেন, আদিবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মত ছাড়া খনি প্রকল্প চাপিয়ে দেওয়া তাঁরা মানবেন না। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বৃহত্তর আন্দোলনের।