• সরকারি কোয়ার্টারে বসে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখেন, হাসপাতালে ‘সময় নেই’ ডাক্তারবাবুর
    এই সময় | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সরকারি কোয়ার্টারে বসে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখেন, অথচ সেই সময়ে হাসপাতালে রোগী এলে দেখেন না— এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠল সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুলে সরব এলাকার লোকজন, রোগীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের মোহবনী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ঘিরে সরগরম এলাকা। এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত চিকিৎসক বিশুভন চক্রবর্তী। তবে ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ কেশপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা। শিউলি বলেন, ‘আমি শুধু এলাকার বিধায়ক বা রাজ্য সরকারের প্রতিমন্ত্রীই নই, কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানও। তাই অবিলম্বে ওই চিকিৎশকের বিরুদ্ধে যাতে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, সেই উদ্যোগ নিয়েছি।’

    কেশপুর ব্লকের মোহবনী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার বিশুভন চক্রবর্তী। তাঁর বিরুদ্ধেই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন রোগীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি কোয়ার্টারকেই ব্যক্তিগত চেম্বার বানিয়ে ফেলেছেন ডাক্তারবাবু। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চেম্বারে বসে রোগী দেখেন তিনি। তার জন্য ২০০ টাকা করে ভিজিটও নেন। আরও অভিযোগ, চেম্বারে থাকার সময়ে হাসপাতালে রোগী এলে তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

    রোগী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিকেল হলেই তাঁর সরকারি কোয়ার্টারের সামনে রোগীদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগী এলেও ডাক্তার তাঁদের দেখেন না বলে অভিযোগ। যদি এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত চিকিৎসক।

    বিধায়ক শিউলি সাহা বলেন, ‘গরীব মানুষকে হাসপাতালে পরিষেবা না দিয়ে, সরকারি কোয়ার্টারে বসে ২০০ টাকা ভিজিটের বিনিময়ে রোগী দেখা। এই অন্যায় কখনওই বরদাস্ত করা যায় না। আমি চাই এই ডাক্তারকে কেশপুর থেকে অবিলম্বে বদলি করে দেওয়া হোক।’

    জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, ‘বিষয়টি আমার কানে আসা মাত্রই আমি তদন্ত কমিটি গড়ে উপযুক্ত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। রিপোর্ট আসার পরই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

    যদিও এলাকার বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, এ সব তৃণমূলের মদতেই চলে। বিজেপির জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, তৃণমূলের আমলেই এই সব সম্ভব। আমার কাছে নির্দিষ্ট খবর আছে, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মদতেই উনি এই কাজ করে থাকেন।’ যদিও তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য মহম্মদ রফিকের দাবি, বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।

  • Link to this news (এই সময়)