• মোদির সফরের এক সপ্তাহ পরেই ফের রক্তাক্ত মণিপুর!‌ জঙ্গি হামলায় শহিদ দুই জওয়ান, আহত আরও পাঁচ
    আজকাল | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ফের রক্তাক্ত হল মণিপুর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের ঠিক এক সপ্তাহ পরেই সন্ত্রাসবাদী হানায় রক্ত ঝরল মণিপুরে। শুক্রবার সন্ধেয় বিষ্ণুপুর জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী অসম রাইফেলসের গাড়িতে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালায়। গুলির লড়াইয়ে দু’জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। গুরুতর আহত অন্তত পাঁচ জন।

    হামলার পরেই ওই অঞ্চলে বাড়তি বাহিনী পাঠানো হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। শুরু হয়েছে পাহাড়–জঙ্গল ঘিরে চিরুনি তল্লাশি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারী কুকি জঙ্গিরাই এই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অসম রাইফেলসের জওয়ানদের নিয়ে একটি মিনি ট্রাক রাজধানী ইম্ফল থেকে বিষ্ণুপুর জেলা সদরের উদ্দেশে যাচ্ছিল। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নাম্বোল সবাল লেইকাই এলাকায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর অতর্কিতে ওই গাড়ির উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা।

    ওই গাড়িটিতে অসম রাইফেলসের ৩৩ নম্বর ইউনিটের জওয়ানরা ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। সম্প্রতি ওই এলাকা থেকে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট বা আফস্পা) প্রত্যাহার করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত শনিবার মণিপুর সফরে গিয়ে বিষ্ণুপুর জেলার ওই এলাকাতেই জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে কনভয় নিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর শুক্রবার সন্ধেয় হামলা চালাল জঙ্গিরা।

    আহত জওয়ানরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পর শহিদ জওয়ানদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা। এক্স হ্যান্ডেলে মণিপুর রাজভবনের তরফে লেখা হয়েছে, ‘শুক্রবার সন্ধেয় মণিপুরে নিরাপত্তাবাহিনীর উপর যে হামলা চালানো হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই ঘটনায় অসম রাইফেলসের দুই বীর জওয়ান শহিদ হয়েছেন। রাজ্যপাল মর্মান্তিক এই ঘটনায় শহিদ পরিবারের উদ্দেশে সমবেদনা জানিয়েছেন। দেশরক্ষায় তাঁদের বীরত্ব ও নিষ্ঠা স্বীকৃতির দাবিদার। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন রাজ্যপাল।’ একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না। এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য প্রশাসন কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল দেবে। অপরাধীরা যোগ্য জবাব পাবে।’

    প্রসঙ্গত, দীর্ঘ বিতর্কের পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর মণিপুরে পা রাখেন মোদি। চূড়াচাঁদপুরের জনসভায় উপস্থিত হয়ে হিংসা ভুলে শান্তির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বার্তা দেন, ‘উন্নয়নের জন্য শান্তি জরুরি।’ উত্তর–পূর্বের রাজ্যে উন্নয়নের মেশিন চালিয়ে যেতে সংঘাত থামানোর আর্জি জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‌কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা করানোর জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।’‌ ২০২৩ সাল থেকে কুকি ও মেতেই জনগোষ্ঠীর হিংসায় মেতে রয়েছে মণিপুর। তবে গত ২ বছরে একবারও মণিপুর যাননি মোদি। যার জেরে বিরোধীদের কোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই দাগ মুছতে উপহারের ডালি সাজিয়ে মণিপুরে যান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনি ফিরতেই ফের হিংসার আগুন জ্বলল মণিপুরে।
  • Link to this news (আজকাল)