ডোভালের সঙ্গে ‘সখ্য’, সাহায্য করেন বাজপেয়ী সরকারকেও! ইয়াসিনের হলফনামায় বিস্ফোরক তথ্য
প্রতিদিন | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সরকারের সঙ্গে ইয়াসিন মালিকের যোগাযোগ নিয়ে শোরগোলের মাঝেই ফের প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য। আদালতে পেশ করা হলফনামায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ইয়াসিন জানালেন, বাজপেয়ী জমানাতেও কেন্দ্রের হয়ে কাজ করেছেন তিনি। খোদ অজিত ডোভাল তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্তাদের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, আরএসএস-এর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রায় ৫ ঘণ্টার গোপন বৈঠক হয়েছিল তাঁর। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট দিল্লি হাই কোর্টে নিজের হলফনামা পেশ করেছেন সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ইয়াসিন। ওই হলফনামায় তিনি দাবি করেছেন, ২০০০-০১ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জমানায় পাকিস্তানের সঙ্গে রমজান যুদ্ধবিরতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ইয়াসিন। তাঁর দাবি, সেই সময় তিনি দিল্লিতে অজিত ডোভালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ডোভাল তাঁকে তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান শ্যামল দত্ত ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্রের সঙ্গে আলাপ করান। মালিক দাবি করেছেন, বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী আরকে মিশ্র তাঁকে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে ব্রজেশ মিশ্রের সঙ্গে প্রাতঃরাশে বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন। এমনকী লালকৃষ্ণ আডবাণী তাঁর প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানান এবং সেই সময়ে তিনি (ইয়াসিন) প্রথম পাসপোর্ট পান। ২০০১ সালে এই পাসপোর্ট নিয়ে আমেরিকা, ব্রিটেন, সৌদি আরব ও পাকিস্তানে গিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পথে সংগ্রামের বার্তা দেন।
চমকের এখানেই শেষ নয়। ওই হলফনামায় আরও দাবি করা হয়েছে, ২০১১ সালে তিনি দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আরএসএস নেতাদের সঙ্গে প্রায় ৫ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক করেন। এই বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর ডায়ালগ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন দ্বারা। নিজের হলফনামায় ইয়াসিনের দাবি, ‘এটা সত্যিই উদ্বেগের বিষয় দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার বদলে তাঁর সঙ্গে খোলাখুলি যোগাযোগ রেখেছেন।’ এমনকী শ্রীনগরে তাঁর বাড়িতে দুই শঙ্করাচার্য এসেছিলেন বলেও জানিয়েছেন ইয়াসিন।
উল্লেখ্য, এর আগে ইয়াসিন মালিকের সেই হলফনামার এক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছিল। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, তিনিই ভারত সরকারের শান্তিবার্তা জঙ্গিনেতার কাছে পৌঁছে দেন। আসলে ওই সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্য স্থাপনের চেষ্টা করছিল মনমোহন সিংয়ের সরকার। আর তাতে শুধু সে দেশের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে নয়, জঙ্গিনেতাদের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হয়েছিল বলে ইয়াসিনের দাবি। তিনি হলফনামায় জানিয়েছেন, ইউপিএ সরকারের আমলে পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও জঙ্গিনেতাদের সঙ্গে ব্যাক চ্যানেল দিয়ে আলোচনার মাধ্যম হিসাবে তাঁকে ব্যবহার করা হত। ইয়াসিনের দাবি, ২০০৬ সালে তিনি নিজে তৎকালীন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর স্পেশ্যাল ডিরেক্টর ভিকে জোশীর নির্দেশে পাক জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের সঙ্গে দেখা করেন। ভারত সরকারের শান্তি বার্তা তাঁর কাছে পৌঁছে দেন।