ভুয়ো কলসেন্টার, দুবাই থেকে কলকাতায় নামতেই গ্রেফতার বলিউড নায়িকার প্রেমিক
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গার্ডেনরিচের নামী এলাকা থেকে শুরু করে দুবাই পর্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন, ফ্ল্যাট, ডুপ্লেক্স, ভিলা, গ্যারেজ ভর্তি মাল্টিপল প্রিমিয়াম গাড়ি, সোনার গহনা ও হিরে সবই আছে। পেশা হল দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ। এই নাম, পরিচয় এবং জীবনযাত্রার আড়ালে বছর খানেক ধরে কলকাতা পুলিশের নজর এড়িয়ে কলসেন্টার খুলে প্রতারণা চালাচ্ছিলেন কুখ্যাত এই প্রতারক। শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়ল ওই প্রতারক। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, তিনি নাকি এক বলিউড নায়িকার প্রেমিক। তাঁর নাম ইমরান কুরেশি।
এতদিন খোঁজাখুঁজি চলার পরও ধরা যাচ্ছিল না ইমরান কুরেশি ওরফে ‘স্যাঙ্কি ওয়াটসন’কে । তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ আগেই জারি করেছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বাবার অসুস্থতার খবর পাওয়ার পর দুবাই থেকে দেশে ফেরার সিদ্ধান্তই তাঁকে ধরিয়ে দেয়। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
জানা যাচ্ছে, স্যাঙ্কি ওয়াটসন কলকাতার বন্দরের গার্ডেনরিচ এলাকার বাসিন্দা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুবাইতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন স্টেডিয়ামের দর্শক আসনে তাঁকে দেখা গিয়েছিল বলিউডের এক আইটেম গার্লের সঙ্গে। শোনা যাচ্ছিল, সেই নায়িকার প্রেমিক তিনি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এই খবরও ধৃতের কুখ্যাতি আরও বাড়িয়েছে। স্যাঙ্কি ওয়াটসনের নেতৃত্বে একটি চক্র কলকাতা, সল্টলেক, নিউটাউন, হাওড়া ও আসানসোল-দুর্গাপুর এলাকায় অবৈধ কল সেন্টার চালু করে বিদেশি গ্রাহক, মূলত মার্কিন নাগরিকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। স্যাঙ্কি ও তাঁর টিম নিজেদের মাইক্রোসফট সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা চালাত।
২০০৫ সাল থেকে এই চক্র চালু ছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই কলকাতার গার্ডেনরিচ ও পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার দুই কল সেন্টারে ধরা পড়ে প্রতারণার একটি বড় চক্র। ধৃত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে ‘কিংপিন’ হিসেবে স্যাঙ্কি ওয়াটসনের নাম উঠে আসে। জানা যায়, তিনি তখন দুবাইতে ছিলেন। তদন্তে সামনে আসে, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে স্যাঙ্কির হাতে ইতিমধ্যেই বেআইনি চক্র থেকে প্রাপ্ত টাকার পরিমাণ হল ১৫০-২০০ কোটি। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, স্যাঙ্কি ওয়াটসনের গ্রেফতারের ফলে কলকাতা এবং দেশের বাইরে পরিচালিত এই প্রতারণার জালকে বড় পরিসরে ভাঙা সম্ভব হবে।