• জমি বিবাদের জেরে প্রতিবেশীকে খুন, প্রৌঢ়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের ...
    আজকাল | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জমি সংক্রান্ত বিবাদ। তার জেরে প্রতিবেশীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। হুগলি রবীন্দ্রনগরের পশ্চিমপাড়ার ঘটনা। গত ২০২১ সালে ২৩ জুন রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা কার্তিক হাওলাদার চুঁচুড়া থানায় এক অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, তাঁর বাবা মহাদেব হাওলাদরকে কাটারি ফিয়ে কুপিয়ে মারধর করেন তাঁদের প্রতিবেশী স্বপন হাওলাদার। 

    মারধরের জেরে মৃত্যু হয়েছে মহাদেব হাওলাদারের। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। অভিযোগের তিন মাসের মধ্যেই তদন্তের চার্জশিট জমা দেয় চুঁচুড়া থানার পুলিশ। এই মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অরূপ চট্টোপাধ্যায়। এই মামলায় মোট দশ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর হুগলি জেলা আদালতের তৃতীয় দায়রা আদালতের বিচারপতি কৌস্তব মুখার্জী আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং শুক্রবার আসামী স্বপন হাওলাদারকে (৫৪) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। 

    জরিমানা না দিতে পারলে আরও ছয় মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলি বলেন, খুব দ্রুততার সঙ্গে পুলিশ এই মামলার তদন্ত শেষ করেছে বলে এত তাড়াতাড়ি মামলার নিস্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার এবং আইনজীবীর ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। 

    প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগেই জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে বাংলায় আরও একটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে দাদার হাতে খুন হতে হল ভাইকে। বাঁধাকপির জমিতে ছাগল ঢোকাকে কেন্দ্র করে বচসার সূত্রপাত। বচসা গড়ায় সংঘর্ষে। চলে এলোপাথাড়ি হাসুয়ার কোপ। আর তাতেই মৃত্যু হল ভাই কমল মণ্ডলের। 

    জানা গেছে, মৃত কমল মণ্ডল উত্তর চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল সদস্য ছিলেন। বর্তমানে মানিকচক ব্লকের অন্তর্গত দক্ষিণ চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। শুধু কমল মণ্ডল নন, গুরুতর আহত কমলের স্ত্রী ময়ূরী মণ্ডল, তাঁর ছেলে ভীম সেন মণ্ডল, বৌদি সমতি মণ্ডল এবং ভাইজি। এর মধ্যে ময়ূরী মণ্ডল গুরুতর আহত। হাসুয়ার কোপে ময়ূরীর বাম হাতের বেশিরভাগ অংশ কাটা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মোট ছ'জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত সকলকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। 

    মূল অভিযুক্ত ফেকন মণ্ডল, ভাইপো প্রবীর মণ্ডল ও বৌদি অনিতা মণ্ডলকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে ভূতনি থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্তে ঘটনাস্থলে হাজির পুলিশের বিশাল বাহিনী। কমল ও ফেকন সম্পর্কে খুড়তোতো ভাই। মৃত কমল ও ফেকনের ভূতনির উত্তর চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবর্ধন টোলায় পাশাপাশি বাড়ি। ভিটেমাটি ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিনের ঝামেলা চলছিল তাঁদের মধ্যে। 

    জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও হয়েছে। উভয়পক্ষ পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে।মামলা গড়িয়েছে আদালতেও। জমি বিবাদের জেরে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকা সত্বেও এখনও পর্যন্ত ফেকনের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ সম্ভব হয়নি। আর এই নিয়ে বারবার দু'পক্ষ ঝামেলায় জড়িয়েছে। জানা গেছে শনিবার দুপুর তিনটা নাগাদ উভয় পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ফেকনের বাঁধাকপির জমিতে কমলের বাড়ির ছাগল ঢুকে পড়ে। আর এই নিয়ে বচসা শুরু হয়। বচসা গড়াই হাতাহাতিতে। শুরু হয় সংঘর্ষ। অভিযোগ বচসা চলাকালীন কমলের উপর এলোপাথাড়ি হাসুয়ার কোপ চালান ফেকন ও তাঁর ছেলে প্রবীর ও স্ত্রী অনিতা। আর তাতেই গুরুতর আহত হন কমল। রক্তাক্ত অবস্থায় জমিতেই লুটিয়ে পড়েন। পরে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে ভূতনি দিয়ারা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তাতেই মৃত্যু হয় কমলের বলে অভিযোগ। 

    ইতিমধ্যে ভূতনি থানার পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ও সন্দেহভাজন আরও কয়েকজনকেও আটক করেছে। কমল মণ্ডলের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)