মাসুদ আজহারের জয়েশ-ই-মহম্মদ নাম বদলে এবার আল-মুরাবিতুন! নজরদারি, নিষেধাজ্ঞার ধাক্কায় অর্থ সংগ্রহে সমস্যা
বর্তমান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: একে তো আন্তর্জাতিক নজরদারি। তার উপর নিষেধাজ্ঞা। জোড়া ধাক্কায় অর্থ সংগ্রহ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের চোখে ধুলো দিতে তাই নামই বদলে ফেলল জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-ই-মহম্মদ। পাকিস্তানে মৌলানা মাসুদ আজহারের এই সংগঠনের নতুন নাম হচ্ছে আল-মুরাবিতুন। আরবিতে এর অর্থ ‘ইসলামের রক্ষক’। আগামী সপ্তাহে মাসুদ আজহারের নিহত ভাই ইউসুফ আজহারের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেও জয়েশের বদলে উদ্যোক্তা হিসেবে আল-মুরাবিতুন নামটির ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ প্রাণ কেড়েছিল মাসুদ আজহারের ভাইয়ের। আগামী সপ্তাহে পেশোয়ারের মারকাজ শাহিদ মুকসুদাবাদে ইউসুফ আজহারের এই স্মরণসভা হবে। সূত্রের খবর, সেখানে জয়েশের শীর্ষ কমান্ডার ও নেতারা উপস্থিত থাকবে।
ভারতে অসংখ্য জঙ্গি হামলার নেপথ্যে রয়েছে মাসুদ আজহারের জয়েশ-ই-মহম্মদ। কিন্তু ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) মতো আম্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থার গেরোয় পড়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জয়েশের পক্ষে পাকিস্তানের মাটিতে অর্থ সংগ্রহের কাজ শক্ত হয়ে পড়েছে। জুলাই মাসে এফএটিএফের একটি রিপোর্টেও সেই উল্লেখ রয়েছে। ফলে বিশ্বের চোখে ধুলো দিয়ে অর্থ সংগ্রহের পথ মসৃণ করতেই এবার নতুন নাম আল-মুরাবিতুন হিসেবে মাঠে নামছে মাসুদ আজহারের সংগঠন। তবে শুধুমাত্র পাকিস্তানেই এই নয়া নামে কাজ করবে তারা।
শুধু নাম বদলই নয়, ‘অপারেশন সিন্দুরে’র ধাক্কায় এবার ডেরাও বদলে ফেলছে জয়েশ। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর থেকে জয়েশ-ই-মহম্মদ ও হিজবুল মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি তাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি সরিয়ে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশে নিয়ে যাচ্ছে বলে ভারতের গোয়েন্দা সূত্রে খবর। ‘অপারেশন সিন্দুরে’ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ফলে নতুন করে ঘাঁটি তৈরির ক্ষেত্রে ওইসব এলাকাকে আর নিরাপদ বলে মনে করছে না জঙ্গি সংগঠনগুলি। সেই কারণেই কৌশলগত ও অবস্থানগতভাবে নিরাপদ খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশকে তারা বেছে নিয়েছে। আর এই ডেরা স্থানান্তরের কাজে পাকিস্তানের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির প্রত্যক্ষ সহযোগিতা রয়েছে বলেও ভারতের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। সূত্রের খবর, খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের মানসেহরা জেলায় অবস্থিত গারহি হাবিবুল্লা শহরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন জঙ্গি নিয়োগের লক্ষ্যে একটি শিবির করে জয়েশ। সেই শিবিরে এসেছিল মাসুদ আজহার ঘনিষ্ঠ শীর্ষ কমান্ডার মৌলানা মুফতি মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরি। জয়েশের সশস্ত্র জঙ্গিদের সঙ্গেই নতুন নিয়োগের সেই শিবির পাহারা দিতে দেখা গিয়েছে পাকিস্তান পুলিশকেও।