• কাকড়শিংয়ে চণ্ডী রূপে পূজিত হন দুর্গা, শুরু হয়েছিল জমিদার বাড়ির সদস্যদের হাতে
    বর্তমান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • মৃন্ময় বসাক, কালিয়াগঞ্জ: রাজশাহী জমিদার বাড়ির সদস্যদের হাত দিয়ে চালু হওয়া পুজো হেমতাবাদের দেবশর্মা পরিবার বংশপরম্পরায় করে আসছে। প্রায় পাঁচশো বছর ধরে হচ্ছে এই পুজো। হেমতাবাদ ব্লকের রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের পাশে কাকড়শিংয়ের উৎমাইচণ্ডীর পুজোয় ঢল নামে ভক্তদের। পুজো নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে কমিটি গড়ে পুজো হয়। 

    দেবশর্মা পরিবারের সদস্য অর্জুন দেবশর্মা জানান, বাংলাদেশের রাজশাহী জমিদার এই পুজোর সূচনা করে। পরে আমাদের দেবশর্মা পরিবার এই পুজোর দায়িত্ব পায়। বর্তমানে বংশের সাত শরিক মিলে পুজোর আয়োজন করা হয়। শুধু উত্তর দিনাজপুর নয়, বাংলাদেশ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকেও ভক্তরা পুজো দিতে আসেন এই মন্দিরে। 

    এখানকার মূর্তিতে রয়েছে বিশেষত্ব। মা দুর্গা এখানে দেবী চণ্ডী রূপে পূজিত হন। দেবীর ১০ হাতের পরিবর্তে চার হাত রয়েছে। দু’হাতে ত্রিশূল। এক হাতে খড়্গ এবং অন্য হাতে চক্র। তবে দেবীর বাহন এখানে সিংহই। লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিককে নিয়ে একচালা প্রতিমাই এখানকার রীতি। পুজোর খরচ ভক্তরাই জোগাড় করে থাকেন। প্রতিমা তৈরি হয় মন্দিরেই। দশমীতে শুধু ঘট বিসর্জন হয়। সারাবছর দেবীর প্রতিমা মন্দিরে রেখে পুজো করা হয়। পুজোর একমাস আগে পুরনো প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে ওই কাঠামোতেই দেবীর মৃণ্ময়ী রূপ গড়া হয়।

    মন্দির কমিটির সভাপতি নকুল দেবশর্মা  বলেন, দেবীর নামে নিজস্ব ৭ বিঘা জমি রয়েছে। রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে আগে জঙ্গলের মধ্যেই দেবীর পুজো হতো। পরে মাটির ও দোচালা মন্দির ছিল। ২০১৮ সালের পর সুসজ্জিত পাকা মন্দির তৈরি হয়। পুজোর সময় মন্দির চত্বরেই বসে মেলা। আগে বলি প্রথা চালু থাকলেও এখন বন্ধ।

    পুজোর চারটি দিন মন্দিরে ভক্তের ঢল নামে। অষ্টমীতে অঞ্জলি দিতে সহস্র মানুষের সমাগম হয় মন্দির প্রাঙ্গণে। নবমীর দিন খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয় সবাইকে। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)