• থিমের অভিনবত্বে সেজে উঠছে বাগুইআটি ও কেষ্টপুরের মণ্ডপ
    বর্তমান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: কোথাও গতি ও প্রতিফলনের মুখোমুখি। নারী শক্তির জাগরণ। কোথাও বাংলা ও বাঙালির প্রাচীন ইতিহাস। কোথাও আবার প্রকৃতি মানুষের সম্পর্কের বাস্তব বিন্যাস। বাগুইআটি অর্জুনপুরের আমরা সবাই ক্লাব, বাগুইআটি অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল ক্লাব থেকে কেষ্টপুর প্রফুল্ল কানন (পশ্চিম) অধিবাসীবৃন্দ। প্রতিটি জায়গাতেই থিমের চমক। আর এই অভিনব থিম নিয়েই সেজে উঠছে বাগুইআটি ও কেষ্টপুরের পুজো মণ্ডপ। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিটি জায়গায় অপরূপ মাতৃপ্রতিমা। সঙ্গে মণ্ডপজুড়ে আলোকসজ্জার ঝরনাধারা।

    থিমের ভাবনায় বরাবরই নজর কাড়ে বাগুইআটি অর্জুনপুরের আমরা সবাই ক্লাব। টানা গত পাঁচবছর ধরে এখানকার থিম মেকার ছিলেন শিল্পী ভবতোষ সুতার। এবছর তিনি নেই। শিল্পী শোভিন ভট্টাচার্য এবার মণ্ডপসজ্জা করেছেন। প্রতিমাসহ মণ্ডপের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তবে, সাধারণের প্রবেশ এখন নয়। ভার্চুয়ালি এই পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্লাব সভাপতি মৌসুমি দত্ত বলেন, এবার আমাদের পুজোর থিম ‘মুখোমুখি’। গতি ও প্রতিফলনের বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিমায় নারীশক্তিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ত্রিনয়ন এবং ত্রিশূলে পেনের থিম রাখা হয়েছে।

    বাগুইআটি অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল ক্লাবের এবারের থিম, ‘বাংলা ও বাঙালি, সমৃদ্ধির আদ্যপ্রান্ত’। প্রতিবছরই এখানকার থিম দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এবারও অভিনব ভাবনায় সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। এই পুজোরও ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর অন্যতম কার্যকর্তা স্বরূপ নাগ বলেন, প্রায় পুরাতত্ত্বের নথি থেকে আমরা জানতে পেরেছি, ৪২ হাজার বছর আগেও এই বাংলায় মানুষের বসবাস ছিল। মহাভারতেও পাণ্ডু রাজার কথা উল্লেখ আছে বর্ধমানে। শশাঙ্ক ছিলেন বাংলার স্বাধীন সম্রাট। তারপর সেন বংশ, খিলজি, আকবরের শাসন, পলাশি যুদ্ধ, ইংরেজদের বাংলা দখল, স্বাধীনতা। বাংলা ও বাঙালির এই দীর্ঘ ইতিহাস যাত্রাকে থিম আকারে ফুটিয়ে তোলা হবে, যা অভিনব। দর্শনার্থীদের এখানে এসে সম্পূর্ণ অন্য স্বাদ পাবেন। জানতে পারবেন, বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসের একটি চক্রও।

    কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন (পশ্চিম) অধিবাসীবৃন্দের থিমও প্রতিবছর মানুষের নজর কাড়ে। এবারের থিম নাম, ‘বিন্যাস’। তৈরি করছেন শিল্পী কৃশানু পাল।

    প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ জীবন মানুষ। প্রকৃতি থেকইে মানুষের সৃষ্টি, আবার মৃত্যুর পর মানুষ প্রকৃতিতেই বিলিন হয়ে যায়। যতদিন বেঁচে থাকে, ততদিন প্রকৃতি থেকেই নানা রসদ পায়। আদিমকাল থেকে মানুষ প্রকৃতির পুজোও করে এসেছে। তবে, শিল্পায়নের সঙ্গে মাত্রারিক্ত নগরায়ণের ফলে প্রকৃতির নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যও। প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বছরের পর বছর ধরে মানুষ ও প্রকৃতির এই সম্পর্কের বিন্যাসই ফুটে উঠছে মণ্ডপে।
  • Link to this news (বর্তমান)