উৎসবের মরসুম ফুরোলে শুরু হয়ে যাবে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পুরো দমে প্রস্তুতি। তার আগে রাজ্য জুড়ে পুজো মণ্ডপ চত্বরে বইয়ের বিপণির সংখ্যা বাড়িয়ে দলের বক্তব্য মেলে ধরার পাশাপাশি ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) পক্ষে প্রচার গড়ে তুলতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি।
বঙ্গ রাজনীতিতে শারদ বই বিপণির সঙ্গে বামপন্থী তথা সিপিএমের সম্পর্ক বহু কালের। সরাসরি দুর্গাপুজোর অংশ না-হয়েও জনসংযোগ রক্ষার কৌশল হিসেবে আজও বাম মনের আস্থা শারদ বই বিপণিতে। তৃণমূল কংগ্রেসও তাদের মুখপত্রের নামে বেশ কয়েক বছর ধরে বইয়ের ছাউনি করছে। সংখ্যায় একেবারে নগণ্য হলেও বিজেপিও গত কয়েক বছর ধরে এই বই বিপণির আয়োজন করে। তবে ছবিটা পাল্টেছে গত বছর থেকে। পুজোর সময় বই বিপণিকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক প্রচারের গুরুত্ব বুঝেছে তারাও। তাই কলকাতায় সে ভাবে না হলেও জেলায় জেলায় বই বিপণির সংখ্যা বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপি সূত্রের খবর, গত বছর রাজ্য জুড়ে প্রায় ৮ হাজার বই বিপণি হয়েছিল। এই বার এই লক্ষ্যমাত্রা প্রায় সাড়ে চার গুণ বাড়িয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক হয়েছে, প্রতি মণ্ডলে অন্তত তিনটি বই বিপণি করতেই হবে। বড় মণ্ডলে সংখ্যাটাচার থেকে পাঁচ হবে। এই মুহূর্তে বিজেপির সক্রিয় মণ্ডলের সংখ্যা ১২ হাজার। সেই হিসেবে অন্তত ৩৬ হাজার বই বিপণি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সব ঠিক থাকলে উৎসবের পর্ব মিটলে এসআইআর হতে পারে রাজ্যে। বিজেপির দাবি, এসআইআর করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকায় পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন করতে হবে। বই বিপণিতে সেই সংক্রান্ত প্রচার জায়গা পাবে। মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় বই বিপণিতে সিএএ-র আওতায় নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা রাখা হবে। জিএসটি সংস্কার নিয়ে প্রচারও করা হবে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বই-প্রেমিক। অনেক ক্ষেত্রে তাঁর বেছে দেওয়া তালিকা থেকে বই বিপণির জন্য বই আনানোর দায়িত্বে এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সূত্রের খবর, গত বছর রাম মন্দিরের উপরে বইয়ের চাহিদা বেশি ছিল। এ বছর বাংলাদেশ-পরবর্তী ঘটনাসমূহ, এসআইআর নিয়ে বেশি সংখ্যক বই আসছে। শমীকের কথায়, “সব ধরনের বই পড়তে ভালবাসি। কিন্তু দলের বই বিপণি হয় মতাদর্শ এবং সামাজিক অবস্থানের উপরে দাঁড়িয়ে দলীয় রাজনীতির কথা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। বিজেপি ভারতের গৌরবগাথা, প্রাচীন ঐতিহ্য এবং সুনির্দিষ্ট সাংস্কৃতিকবহমানতার কথা বলে। বিপণিতেসেই বই থাকবে।”