• পুজোর ছুটি ‘ব্যালান্স’ করছে বাঙালি, শহরের ভিড়ে ঠাকুর দেখে নিরিবিলি যাপন উত্তরবঙ্গে, পকেটের জোর থাকলে এ বছরের অন্যতম পছন্দ ভিয়েতনাম-শ্রীলঙ্কা
    বর্তমান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুজোর সময় ক’টা দিন ছুটি। চাকুরিজীবী বাঙালির কাছে এই সময়টাই বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত। আর বাঙালি বরাবরের জন্য ‘ব্যালান্স’ করতেই ভালোবাসে। এখন কলকাতায় চারদিনের পুজো বেড়ে সপ্তাহখানেকের হয়ে গিয়েছে। ফলে লাভ হয়েছে ভ্রমণ প্রিয় বাঙালির। কারণ ছুটি ‘বালান্স’ করা যাচ্ছে। গোটা পুজোটা শহরের বাইরে থাকতে অনেকেই পছন্দ করেন না। তাই বেশিরভাগ বাঙালির পরিকল্পনা, পুজোর কয়েকটি দিন কলকাতায় কাটিয়ে, ঠাকুর দেখে তারপর চলে যাবে বেড়াতে। কলকাতার ভিড়ে কাটানোর পর একটু নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে মানুষ। তাই উত্তরবঙ্গের অফবিট জায়গাগুলি অধিকাংশ বাঙালির প্রিয়। রেস্ত থাকলে অবশ্য অনেকেরই নয়া পছন্দ ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা।

    উত্তরবঙ্গের ‘অফবিট’ এলাকা এখন বাঙালিদের পছন্দের তালিকার প্রথমের দিকে থাকে। যদিও ‘অফবিট’ এলাকার হোমস্টে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘কিছুই এখন আর সে অর্থে অফবিট নেই।’ তবুও ডুয়ার্স, কালিম্পং, কার্শিয়ংয়ের বিভিন্ন নিরিবিলি এলাকায় বাঙালি যাচ্ছে। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, উত্তরবঙ্গে গেলেই বাঙালির দার্জিলিংয়ের প্রতি একটা দুর্বলতা এসে যায়। অধিকাংশই বলেন, দু’দিন অফবিটে থেকে একদিন অন্তত দার্জিলিংয়ে থাকব। এ বছর অবশ্য ডুয়ার্সের দিকে যাওয়ার ঝোঁক বেশি দেখা যাচ্ছে।’

    বাঙালির বরাবরের অভিযোগ, দার্জিলিংয়ের মল রোড নাকি ষষ্ঠীর একডালিয়ার মতো ভিড়াক্কার থাকে। কিন্তু দিনের শেষে দার্জিলিং না গেলেও নয়। অফবিট হোমস্টেতে থাকলে কি দুর্গাপুজোর কোনও আভাস পাওয়া যায়? এক হোমস্টের কর্ণধার বলেন, ‘পাহাড়ে মিষ্টি পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার। আমরা এক বছর পুজোর সময় অতিথিদের জন্য মিষ্টির ব্যবস্থা করেছিলাম। সেটাও কলকাতা থেকে নিয়ে আসতে হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবছর তো তা করা সম্ভব হয় না।

    কালিম্পংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ের কোলে ছোট ছোট দুর্গাপুজো হয়। তা দেখার সুযোগ থাকে পর্যটকদের।’ এ বছর নবমীতে কালিম্পংয়ে যাচ্ছেন নরেন্দ্রপুরের দে পরিবার। সুমিত দে নামে ওই পরিবারের একজন বললেন, ‘সারাবছর তো কোথাও যাওয়া হয় না। প্রতিবছর কয়েকটা দিন কলকাতায় কাটিয়ে তারপর বাইরে কোথাও চলে যাই। দু-তিনদিন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিই। ৪-৫ দিনে দিব্যি ঘোরা হয়ে যায়।’

    যাঁদের আবার পকেটের একটু জোর আছে, তাঁরা অনেকেই এ বছর ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা দৌড়চ্ছেন। ট্রাভেল এজেন্টরা বলছেন, ‘দুবাই, ব্যাঙ্কক এখন ব্যাকডেটেড। ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কায় যাবে বলে খোঁজখবর করছে অনেকে। এসব জায়গায় যাওয়ার বাজেট ইউরোপের তুলনায় অনেকটাই কম।’ তরুণ-তরুণীরা আবার ইন্টারনেট ঘেঁটেই কোথায় কতদিন ঘোরা যাবে, সে সব স্থির করেন। তার ফলে খরচ একটু কম পড়ে। আর যাঁরা পরিবার নিয়ে যাবেন তাঁরা সাধারণত ট্রাভেল এজেন্টদের উপরই ভরসা করেন।
  • Link to this news (বর্তমান)