• স্বামীকে ঠকাচ্ছে না তো! বিশ্বস্ততা প্রমাণের জন্য 'অগ্নিপরীক্ষা', ফুটন্ত তেলে জোর করে ডোবানো হল গৃহবধূর হাত
    আজকাল | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঠিক যেন সীতার 'অগ্নিপরীক্ষা'। স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত কিনা, তা প্রমাণ করার জন্য এক গৃহবধূকে একুশ শতকেও 'অগ্নিপরীক্ষা'র মতোই এক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হল‌। জোর করে তাঁর হাত ডোবানো হল ফুটন্ত তেলে। গৃহবধূর হাত ফুটন্ত তেলে ডুবিয়ে দেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাই। এমনকী স্বামীও তাঁকে এই কাজে জোরাজুরি করেছিলেন। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের মেহসানায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিন কয়েক আগে ঘটনাটি ঘটে বিজাপুর তালুকের গেরিতা গ্রামে। জানা গেছে, গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাঁকে সন্লদেহ করতেন। তিনি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত কি না, তা ঘিরেও মূলত সন্দেহ ছিল। আদৌ স্বামীকেই শুধুমাত্র ভালবাসেন কিনা, তা জানার জন্য 'অগ্নিপরীক্ষা' নিতে চেয়েছিল। 

    গত ১৬ সেপ্টেম্বর পারিবারিক অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। যুবতী জানিয়েছেন, সেদিন ননদ যমুনা ঠাকোর, তাঁর স্বামী মনুভাই ঠাকোর এবং পরিবারের আরও দুই সদস্য তাঁকে বিশ্বস্ততার প্রমাণ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। সেই সময়েই স্বামী সহ পরিবারের সদস্যরা বলেন, তাঁকে ফুটন্ত তেলে হাত রেখে বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে হবে। গরম তেলে হাত রাখার পরেও যদি তাঁর হাত নো পোড়ে, তাহলেই প্রমাণিত হবে তিনি স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত। কোনও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত নন। 

    কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা জোরাজুরি করলেও, তাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন গৃহবধূ। এরপরই তাঁকে জোর করে ফুটন্ত তেলের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জোর করে ফুটন্ত তেলে তাঁর হাত রাখা হয়। ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় আহত অবস্থায় বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই গৃহবধূ। এই ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই গৃহবধূর নন্দাই-সহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

    প্রসঙ্গত, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে সন্দেহের বশে দিন কয়েক আগেই এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল গুজরাটে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের কচ্ছ জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নক্ষত্রনা তালুকের নানা কাঁদিয়া গ্রামে ৪০ বছর বয়সি যুবতীকে গলা টিপে খুন করার অভিযোগ ওঠে তাঁর দুই সন্তানের বিরুদ্ধে। পুলিশি জেরায় মাকে খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছে তারা। মৃত যুবতীর এক সন্তানের বয়স ১৯ এবং অন্যজন নাবালক। দু'জনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

    তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, যুবতীর পরিবারের সকলেই গত বছর ধরে একটি ফার্মে কাজ করতেন। খুনের রাতে ফার্মেই কাজে ব্যস্ত ছিলেন যুবতীর বাবা। সেই সময় ওই ফার্মের মালিক যুবতীর বাবাকে জানান, দুই ছেলে মায়ের গলা টিপে খুন করেছে। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছন যুবতীর বাবা। বাড়িতে পৌঁছেই যুবতীর নিথর দেহ দেখতে পান বাবা। পাশাপাশি যুবতীর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। 

    পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, দুই ছেলেই মায়ের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিল। তাদের সন্দেহ ছিল, মা সম্ভবত কোনও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত রয়েছেন। কী দেখে এমন সন্দেহ হয়েছিল? দুই সন্তান মাকে জানিয়েছে, রোজ মাঝ রাতে মা ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। কেউ মাকে প্রায়ই ফোন করতেন। কখনও কখনও বাড়ির কাজেও মন দিতেন না। তাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন না মা। কথাও কম বলতেন। কারণ দিনের বেশিরভাগ সময় ফোনের মাকে সময় কাটাতে দেখা যেত। 

    ঘটনার দিন রাতেও মায়ের মোবাইল সেই নম্বর থেকে ফোন আসে। মা কাজ ফেলে রেখে ফোনে কথা বলতে শুরু করেন। সেই আচরণে আবারও রেগে যায় দুই ছেলে। ঘণ্টাখানেক পরে মায়ের গলা টিপে দুজনে খুন করে। এরপর সারারাত ফার্মে লুকিয়ে ছিল দুই ভাই। দাদু অভিযোগ দায়ের করতেই পুলিশ দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে। জেরায় তারা খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয়। 

    পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, যুবতী ২০ বছর আগে বিয়ে কয়েন। কিন্তু কয়েক মাস ধরে তিনি আর স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। দুই ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। তাঁর স্বামী ঘটনার দিন কাজে ব্যস্ত ছিলেন। স্বামীর থেকে যুবতী আলাদা থাকতে শুরু করার পরেই দুই ছেলের সন্দেহ হয়েছিল। তাদের সন্দেহ ছিল, মা প্রেম করছেন। সেই প্রেমিকের কারণেই আর বাবার সঙ্গে থাকেন না। 

    পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই সন্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে।‌ ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)