কপালে তিলক, হাতে বাঁধতে হবে রক্ষাসূত্র! 'গরবা ইভেন্ট'-এর জন্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নিয়মে তোলপাড়...
আজকাল | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: গরবা ইভেন্ট। কিন্তু তাতে যদি হিন্দু ছাড়াও অন্য ধর্মের লোকজন ঢুকে পড়েন? তাহলে? একেবারে এই লক্ষ্যেই নয়া নিয়ম! সূত্রের তথ্য় তেমনটাই। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে তথ্য, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গরবা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণাকারীদের জন্য সাফ সাফ নিয়ম জারি করেছে।
তথ্য, গরবা অনুষ্ঠানে কেবল হিন্দুদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) জানিয়েছে যে, প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আগে লোকেদের 'তিলক' লাগাতে হবে, একটি পবিত্র সুতো ('রাক্ষসূত্র') বাঁধতে হবে এবং হিন্দু দেবতার কাছে প্রার্থনা করতে হবে।
শনিবার নাগপুরে সংগঠনের বিদর্ভ সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত তিত্রে বলেছেন, গোমূত্র উপস্থিতদের উপর ছিটিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন যে, রবিবার থেকে শুরু হয়ে ১ অক্টোবর পর্যন্ত নবরাত্রি উদযাপনের সময় নির্দেশিকা অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য ভিএইচপি এবং বজরং দলের কর্মীরা গরবা মণ্ডপগুলি পর্যবেক্ষণ করবেন।
কিন্তু কেন এইসব নিদান? ভিএইচপি-র বক্তব্য, যাতে শুধুমাত্র হিন্দুরা এই অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারে এবং "লাভ জিহাদ"-এর কোনও ঘটনা না ঘটে, সেই কারণেই একগুচ্ছ নিয়ম ভেবে ফেলেছে তারা। ঘটনাক্রমে, প্রতি বছর নবরাত্রি উদযাপনের আগেই এই নয়া নিয়মের বিষয়টি উত্থাপিত হয়।
ভিএইচপির জাতীয় মুখপাত্র শ্রীরাজ নায়ার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, 'গরবা কেবল একটি নৃত্য নয় বরং দেবীকে সন্তুষ্ট করার জন্য একটি উপাসনার ধরণ। শুধুমাত্র আচার-অনুষ্ঠানে বিশ্বাসী ব্যক্তিদেরই অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া উচিত।'
এই নির্দেশিকা জারির পরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে একহাত নিচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। যদিও সেসবের মাঝে সাফাই গেয়ে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে বলেছেন যে এই ধরনের অনুষ্ঠানে কে প্রবেশ করবে তা আয়োজকরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তাঁর মতে, 'প্রতিটি আয়োজক কমিটি নির্দিষ্ট নিয়ম নির্ধারণ করে এবং তাদের তা করার অধিকার রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য পুলিশের অনুমতি থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনও সমস্যা নেই কে কী নিয়ম চালু করছেন তা নিয়ে।'
মহারাষ্ট্র বিজেপির মিডিয়া প্রধান নবনাথ বান বলেছেন যে, গরবা একটি হিন্দু অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। তবে শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেছেন যে, দেশে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাউতের বক্তব্য, 'একটি সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য, প্রধান কাজ। আমি সকল ধর্মের প্রতি সমান সম্মানের কথা বলছি না, তবে যেভাবে এই বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তা মহারাষ্ট্র বা দেশের জন্য শোভনীয় নয়।'
চরম কটাক্ষ করেছে হাত শিবিরও। এই নয়া নিয়ম-নির্দেশিকা প্রসঙ্গে হাত শিবিরের নেতার বক্তব্য-'তারা আমাদের আরও বিভক্ত করতে চায় এবং তাদের স্বার্থের জন্য ধর্মের রাজনীতি করতে চায়। ভিএইচপির এই অবস্থান নতুন নয়। তাদের ধারণা দেশকে অস্থিতিশীল করা। ক্ষমতা অর্জনের জন্য তারা দেশের পরিস্থিতির আরও ক্ষতি করতে যে কোনও স্তরে যাবে। সমস্ত বিজেপি সংগঠন একই পদ্ধতি অনুসরণ করে।'