দু' ভরি সোনার হার খোয়ালেন বৃদ্ধা, স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাচ্ছিলেন আরও একজন, ঘাটে ঘাটে ভিড় চুঁচুড়ায় ...
আজকাল | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: উমার মর্ত্যে আগমনে দেবী পক্ষের সূচনা ও পিতৃপক্ষের অবসানে সন্ধিক্ষণে মহালয়া। পূর্বপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ করতে সকাল থেকেই গঙ্গার ঘাটগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
চুঁচুড়া ময়ূরপঙ্খী ঘাটে সেই ভিড়ের মধ্যেই স্নান করতে এসেছিলেন চুঁচুড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাপাসডাঙ্গার বাসিন্দা বিপাসা সাহা। গঙ্গাস্নান করে ঘাটের পাশেই একটি মিষ্টির দোকানে দাঁড়িয়ে মিষ্টি কিনছিলেন। অভিযোগ, তখনই তাঁর খেয়াল হয়, গলায় পরে থাকা দু' ভরি সোনার হার নেই। বৃদ্ধার সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী বিমল সাহা। তাঁকে বিষয়টি জানান বৃদ্ধা। আবার গঙ্গার ঘাটে ফিরে গিয়ে পুলিশ কর্মীদের হার খোয়া যাওয়ার বিষয়টি জানান দম্পতি। পুলিশ কর্মীরা তাঁদের থানায় গিয়ে ডায়রি করার পরামর্শ দেন বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে বৃদ্ধা বলেন, 'বাড়ি থেকে সোনার হার পরে এসেছিলাম, বাড়িতে রেখে আসতে ভুলে গিয়েছিলাম। প্রতিবছর মহালয়ার দিন এই ঘাটে স্নান করি। গঙ্গায় যখন স্নান করি তখনও ছিল হারটি।' দুই লক্ষাধিক টাকার হার খুইয়ে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা।
অন্যদিকে, সকালে একজন তর্পণ করতে এসে তলিয়ে যাচ্ছিলেন একজন। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, তাঁকে উদ্ধার করেন ঘাটে থাকা পুরকর্মীরা। পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়। গহনা পরে স্নানে নামতেও নিষেধ করা হয়।চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি চন্দননগর অলকানন্দা ভাওয়াল, আইসি চুঁচুড়া রামেশ্বর ওঝা সাধারনের নিরাপত্তায় গঙ্গার ঘাট গুলো ঘুরে দেখেন।
মহালয়ার পুণ্য লগ্নে গঙ্গাসাগর থেকে বাবুঘাট, পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণে উপছে পড়েছে ভিড়। পাশাপাশি চলছে প্রশাসনিক নজরদারি।
মহালয়ার পুণ্য লগ্নে পুণ্য স্নানে গঙ্গাসাগরে ৭০ হাজার পুণ্যার্থীদের সমাগম ঘটেছে। ডায়মন্ড হারবারের হুগলি নদীর পাড়ে তর্পণের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো৷ কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার এলাকার ৭টি স্নানের ঘাটে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির উদ্যোগে পুণ্যার্থীদের মিষ্টিমুখেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার হুগলি নদীতে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। আজ মহালয়া। পিতৃপুরুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দেবীপক্ষের সূচনা। রাজ্যের অন্যতম তীর্থস্থান গঙ্গাসাগরে ভোর থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে।
পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ করতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন গঙ্গাসাগরের তীরে। সূর্যোদয়ের আগেই শুরু হয়েছে এই পবিত্র অনুষ্ঠান। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। এই বিপুল জনসমাগম সামলাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রবিবার জানা যায়, মহালয়ার পুণ্যতিথিতে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে গঙ্গায় স্নান করতে এসে প্রাণ গিয়েছে এক কিশোরের। রবিবার সকালে নদীয়া জেলার কল্যাণী থানার রথতলা রানী রাসমণি ঘাটে ভাগীরথী গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয় রোহিত বল নামে এক যুবকের। আনুমানিক ১৮ বছর বয়সী রোহিত গয়েশপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাগঞ্জ তিন নম্বর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।