মহালয়ার দিন তর্পণে গঙ্গার ঘাটে ভিড়ের মাঝে ঘটল দুই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। একদিকে, তর্পণে এসে প্রায় দু’ভরি ওজনের সোনার হার হারালেন এক বৃদ্ধা, অন্যদিকে স্নানের সময় তলিয়ে যেতে থাকা এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করলেন পুরসভার কর্মীরা। রবিবার সকাল থেকেই হুগলি জেলার চুঁচুড়ার গঙ্গার ঘাটগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সেই ভিড়েই ঘটে এই দু’টি ঘটনা।
চুঁচুড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাপাসডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বিপাশা সাহা মহালয়ার সকালে স্নান ও তর্পণ করতে গিয়েছিলেন চুঁচুড়ার ময়ূরপঙ্খী ঘাটে। স্নান শেষে ঘাটের কাছে একটি মিষ্টির দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সেই সময়ই খেয়াল করেন, গলায় নেই তাঁর সোনার হার। প্রায় দু’ভরি ওজনের ওই হারটি তর্পণে আসার সময় পড়েই এসেছিলেন বিপাশাদেবী।
ঘটনার পর সঙ্গে থাকা স্বামী বিমল সাহাকে বিষয়টি জানান তিনি। দু’জনে দ্রুত ফিরে আসেন ঘাটে ও উপস্থিত পুলিশকর্মীদের বিষয়টি জানান। পুলিশ তাঁদের থানায় গিয়ে জেনারেল ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। বিপাশাদেবী জানান, ‘প্রতিবছর এই ঘাটেই তর্পণ করি। এবার বাড়িতে গয়নাটি রেখে আসতে ভুলে গিয়েছিলাম। গঙ্গায় নামার সময়ও হারটি গলাতেই ছিল।’
হারটির আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা বলেও তিনি জানিয়েছেন। হঠাৎ হার খুইয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধা। অন্যদিকে, এদিন সকালে তর্পণের পর গঙ্গায় স্নান করতে নেমে হঠাৎ তলিয়ে যেতে থাকেন এক ব্যক্তি। তৎক্ষণাৎ ঘাটে উপস্থিত পুরসভার কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচেন ওই ব্যক্তি। এই দুই ঘটনার পরেই ঘাটে উপস্থিত মানুষজনকে চুঁচুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার করে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষকে গয়না পরে গঙ্গায় নামতে নিষেধ করা হয়।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে এলাকা পরিদর্শনে আসেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার অলকানন্দা ভাওয়াল ও চুঁচুড়া থানার আইসি রামেশ্বর ওঝা। তাঁরা ঘাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন এবং অতিরিক্ত নজরদারির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। প্রতি বছরই মহালয়ার দিনে এমন ভিড় জমে চুঁচুড়ার ঘাটগুলিতে। প্রশাসনের দাবি, এবারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী বছরগুলোতে আরও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হবে।