• কাউন্সিলাররা হতে পারবেন না ওয়ার্ড সভাপতি, ছাব্বিশের আগে সংগঠন ঢেলে সাজাতে কড়া নীতি তৃণমূলের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ছাব্বিশের ভোটকে পাখির চোখ করে এগোতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। তাই বিধানসভা ভোটের আগেই দলীয় সংগঠনে রদবদল আনতে চাইছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সংগঠনকে আরও বিকেন্দ্রীকরণের উদ্দেশে এবার থেকে কোনও কাউন্সিলর আর নিজস্ব ওয়ার্ডে দলের সভাপতি হতে পারবেন না। কলকাতা পুরসভা ও রাজ্যের অন্যান্য পুরসভা এলাকায় এই নিয়ম কঠোরভাবে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা জেলার সংগঠন নিয়ে বৈঠকে বসবেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। বৈঠক হবে তাঁর দপ্তরে। ওয়ার্ড সভাপতি নির্বাচনে বিধায়ক থেকে কাউন্সিলর সবার মতামত নেওয়া হবে। দলের তরফে সমীক্ষা রিপোর্টও তৈরি করা হয়েছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

    কাউন্সিলর সভাপতি না হয়েও তাঁর স্বামী-স্ত্রী বা পরিবারের কেউ সভাপতি হন, তাহলে কি এই নীতি কার্যকারিতা হারাবে এই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তবে তার বিকল্প হিসাবে ঠিক করা হয়েছে, ওয়ার্ড সভাপতি করা হবে কোনও সিনিয়র ও অভিজ্ঞ সংগঠককে, যিনি সরাসরি কাউন্সিলরের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত নন। এই মর্মে জেলা নেতৃত্বকেও চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।

    কারণ কাউন্সিলররা যদি একই সঙ্গে সভাপতি হন, তবে সংগঠনে একক প্রভাব তৈরি হয় বলে মনে করছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এতে সাধারণ কর্মীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ কমে যায়। দায়িত্ব আলাদা থাকলে সংগঠনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকবে। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অনেক বেশি মানুষ অংশ নিতে পারবে বলে মত দলের একাংশের।

    প্রসঙ্গত, সংগঠন পুনর্গঠনের কাজ বেশ কিছুদিন ধরেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি জেলার টাউন ও ব্লক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মহালয়ার আগে ছয়টি জেলায় নতুন সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনে দায়িত্বে আনা হয়েছে নতুন মুখ। শনিবার সামাজিক মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস পোস্ট করে সে কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। এবার নজর পুরোপুরি কলকাতা ও রাজ্যের পুরসভা এলাকায়।

    স্থানীয় সংগঠনের প্রভাবশালী নেতাদের একক আধিপত্য ভাঙতেই রাজ্যের শাসক শিবির এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বকে সামনের সারিতে এনে সংগঠনের ভিত মজবুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে দলীয় কর্মীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়ার পাশাপাশি বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও শক্তি জোগাবে। এটি শুধু রাজনৈতিক কৌশল নয়, সংগঠন চালনার পদ্ধতি বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এককথায় ছাব্বিশের ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে নতুন ছকে সংগঠন গড়ে তুলতে চাইছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)